ট্র্যাফিক পুলিশের দাদাগিরির দিন শেষ! এবার একশন নেবে গাড়ির মালিক, জেনে নিন ট্র্যাফিক রুলসে চালকের অধিকার!

ট্র্যাফিক পুলিশের দাদাগিরির দিন শেষ! এবার একশন নিতে পারবে গাড়ির মালিক, ট্র্যাফিক রুলস অনুযায়ী কি কি করা উচিত?

ট্র্যাফিক পুলিশের
দাদাগিরির দিন শেষ!

এবার একশন নিতে পারবে
গাড়ির মালিক!

যখন তখন চালককে
দিতে পারবে না লাঠির বাড়ি!
কাটতে পারবে না অবৈধ চালান!

কেড়ে নিতে পারবে না
গাড়ির চাবি!
খুলতে পারবে না গাড়ির হাওয়া!

ট্র্যাফিক রুলস অনুযায়ী
কি কি করা উচিত?

রাস্তায় গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে, ট্র্যাফিক পুলিশের মুখোমুখি হননি এমন চালক খুব কম আছেন। চালক আর ট্র্যাফিক পুলিশের কথা কাটাকাটি খুব সাধারণ একটি বিষয়। রাস্তায় বেরোলেই কম বেশি চোখে পড়ে এই দৃশ্য। কখনও চালকের কলার ধরে টানছেন ট্র্যাফিক পুলিশ, তো কখনও আবার ট্র্যাফিক পুলিশের দিকে তেড়ে যাচ্ছেন চালক। এখানেই থেমে থাকে না, চালকের গাড়ির চাবি কেড়ে নেওয়া থেকে শুরু করে টায়ারের হাওয়া লিক, বেশি টাকা চালান কাটার মতন কাণ্ডও অহরহ ঘটে। ট্র্যাফিক আইনে, ট্র্যাফিক পুলিশের এক্তিয়ার আদতে কতটুকু ? কি কি সীমাবদ্ধতা রয়েছে তাদের! কি বলছে ট্র্যাফিক আইন! ট্র্যাফিক আইনে একজন চালক হিসেবে আপনারও কিছু অধিকার রয়েছে। ট্র্যাফিক রুলস শুধুমাত্র ট্র্যাফিক পুলিশদের জন্যই নয়। এগুলো আপনার জানা থাকা উচিত। তাহলেই বুঝতে পারবেন ট্র্যাফিক গার্ড কোন কাজটা ঠিক কতটুকু করতে পারে। আর আপনিও জানতে পারবেন আপনার কি ভূমিকা রয়েছে। এক নজরে দেখে নেওয়া যাক ট্রাফিক আইন সম্পর্কিত সমস্ত খুঁটিনাটি-

এক, ট্র্যাফিক পুলিশের কাজ ট্র্যাফিক সংক্রান্ত যাবতীয় বিষয় দেখা শুনা করা। কোনও চালককে হেনস্থা করার অধিকার তাদের নেই। চালক যদি কোনও ভুল করে, সেক্ষেত্রে আইনত পদক্ষেপ নিতে পারেন।

দুই, কোনও চালক ট্র্যাফিক রুলস লঙ্ঘন করলে, ট্র্যাফিক পুলিশ কোনও ভাবেই চালকের গাড়ির চাবি খুলে নিতে পারেন না। তেমনি টায়ারের হাওয়াও লিক করার কোনও অধিকার ট্র্যাফিক পুলিশের নেই। কোনও ট্র্যাফিক গার্ড এই ধরনের কাজ করলে তা সম্পূর্ণ আইন বিরুদ্ধ। এমন পরিস্থিতির শিকার হলে আপনি সম্পূর্ণ ঘটনা ক্যামেরা বন্দি করে নিকটস্থ থানায় অভিযোগ জানাতে পারেন।

তিন, গাড়ি চ্যাকিং এর সময়, কোনও চালককে বিরক্ত বা বিব্রত করার অধিকার ট্র্যাফিক পুলিশের নেই।

চার, গাড়ি বাজেয়াপ্ত করা কিংবা গাড়ির মালিককে অ্যারেস্ট করার অধিকারও ট্র্যাফিক গার্ডের নেই। ইন্ডিয়ান মোটর ভেহিকেল অ্যাক্ট ১৯৩২ অনুসারে, এই কাজটি করতে পারবে কেবল অ্যাসিস্ট্যান্ট সাব-ইন্সপেক্টর অথবা তার উপরের র‍্যাঙ্কের অফিসার। তাও শুধুমাত্র উপযুক্ত ও যথাযথ কারণে ভিত্তিতে। কোনও কনস্টেবল এই কাজ করতে পারবেন না।

পাঁচ, চালান কাটার ক্ষেত্রেও রয়েছে নির্ধারিত নিয়ম। একজন কনস্টেবল শুধু মাত্র ১০০ টাকা চালান কাটতে পারেন। অতিরিক্ত চালান চেয়ে চালককে কোনও ভাবেই বিব্রত করতে পারেন না। অ্যাসিস্ট্যান্ট সাব-ইন্সপেক্টর অথবা তার উপরের র‍্যাঙ্কের অফিসার ১০০ টাকার বেশি চালান কাটতে পারেন।

ছয়, নিয়ম লঙ্ঘনের জন্য আপনার কাছে থেকে চালান কাটা হলে, লক্ষ্য করবেন ট্রাফিক পুলিশের কাছে, চালান কাটার বই বা ই-চালান মেশিন আছে কি না। একমাত্র এই দুটি পদ্ধতিতে চালান কাটা যায়। এর বাইরে যদি হাতে হাতে টাকা নিতে চায়, সাথে সাথে বিষয়টি নিকটস্থ থানায় জানান। এছাড়াও কোনও পুলিশ এভাবে চালান কাটার কথা বললে কখনই টাকা দেবেন না।

সাত, চালান কাটার সময় কিংবা আপনাকে কোনও কারণে জেরা করার জন্য, ট্রাফিক পুলিশকে ইউনিফর্মে থাকাটা বাধ্যতামূলক। সেই সাথেই বুকে থাকতে হবে নাম প্লেট। যদি এগুলো না থাকে, সেক্ষেত্রে তাদের পরিচয়পত্র চাওয়ার অধিকার আপনার আছে।

অধিকাংশ চালক ট্র্যাফিক রুলস না জানায় ট্র্যাফিক পুলিশ দেখে ঘাবড়ে যান। ভাবেন ট্র্যাফিক পুলিশ যা বলছেন তাই হয়ত সত্যি। কিন্তু ব্যাপারটা তেমন নয়। আপনাকে বুঝতে হবে, জানতে হবে- অধিকার আপনারও আছে। আইন কখনওই এক তরফা হয় না। ট্র্যাফিক আইনে পুলিশ ও চালক উভয়ের কথাই বলা হয়েছে।


Posted

in

by

Tags:

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *