হিন্দু শাস্ত্রে গোমাংস খাওয়া নিষিদ্ধ কেন জানেন? কীভাবে তৈরি হল এই প্রথা? গোমাংস খেলে কিই বা হবে? নেপথ্যে রয়েছে শাস্ত্রীয় ব্যাখা

হিন্দু শাস্ত্রে গোমাংস খাওয়া নিষিদ্ধ কেন জানেন? কীভাবে তৈরি হল এই প্রথা? গোমাংস খেলে কিই বা হবে? নেপথ্যে রয়েছে শাস্ত্রীয় ব্যাখা

হিন্দু শাস্ত্রে গোমাংস খাওয়া
নিষিদ্ধ কেন জানেন?

সবাই খেলেও
এড়িয়ে যায় হিন্দুরা
এমনকি ছুঁয়েও দেখেন না

কীভাবে তৈরি হল এই প্রথা
গোমাংস খেলে কিই বা হবে?

নেপথ্যে রয়েছে
শাস্ত্রীয় ব্যাখা

হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষদের প্রায়শই একটি প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয়। সেটি হল হিন্দুরা কেন গোমাংস খায় না। গো মাংস খাওয়া কেন নিষিদ্ধ। মুসলিম কিংবা অন্যান্য সম্প্রদায়ের মানুষেরা গো মাংস খেলেও, হিন্দুদের গোমাংস খাওয়ার চল নেই। অবশ্য এই বিষয়টি নিয়ে নানা রকম মতভেদ ও তর্ক বিতর্ক রয়েছে। কেউ কেউ বলেন হিন্দুরা গোমাংস খেতে পারেন। তবে অধিকাংশ মানুষই এই ধারণার বিরোধী। সনাতনী সম্প্রদায়ের বিশাল একটি অংশ গোমাংস খাওয়া তো দূর, ছুঁয়েও দেখেন না। অনেক প্রাচীন কাল থেকেই এই নিয়ম মেনে আসছেন অধিকাংশ সনাতনী উপাসকেরা। অনেকেই এই গোমাংস না খাওয়ার উপযুক্ত কারণগুলো জানেন না। বিনা কারণে সনাতন ধর্মীরা এই প্রথা মানেন না। নেপথ্যে অনেক গুরুত্বপূর্ণ কারণ রয়েছ। রয়েছে শাস্ত্রীয় যুক্তি ও ব্যাখা। একই সাথে মানসিক কিছু কারণও রয়েছে।

শাস্ত্রীয় যুক্তিঃ

এক) হিন্দু ধর্মের বিভিন্ন স্তরে উল্লেখ আছে, গো মাংস খাওয়া সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। কারণ হিন্দুদের কাছে গরু মায়ের সমান। গরুকে পবিত্র মাতা বলে সম্বোধন করা হয়। হিন্দুরা গরুকে পূজা করে।

দুই) সনাতনীদের পবিত্র গ্রন্থ বেদে সাত ধরণের মায়ের কথা উল্লেখ করা হয়েছে । এদের মধ্যে গরুকেও স্থান দেওয়া হয়েছে। দেখুন সেই ৭ রকমের মা- (১) নিজের জন্মদায়িনী মাতা (২) বেদ মাতা (৩) ধরণী মাতা (৪) গো মাতা (৫) রাণী মাতা (৬) ব্রাহ্মণ মাতা (৭) গুরুদেবের স্ত্রী মাতা। চার নম্বরে রয়েছে গো মাতার উল্লেখ।

তিন) সনাতনী উপাসকদের মতে, গরু মাতৃতুল্য, গরুর দুধ খেয়ে শিশু পরিপূর্ণভাবে বেড়ে ওঠে। সেই গরুকে কীভাবে ভক্ষণ করা সম্ভব। গরুকে ভক্ষন করা মানেই ঘোরতর পাপের ভাগীদার হওয়া।

চার) গো মাংস না খাওয়া নেপথ্যে আরও একটি ধর্মীয় যুক্তি, গরু শ্রী কৃষ্ণের প্রিয় খেলার সাথী। ভগবান শ্রীকৃষ্ণ বাল্যকালের গো-মাতাদের সাথে লীলা খেলা করেন। অতএব এই দিক থেকেও গো মাংস খাওয়া হিন্দু ধর্মে নিষেধ। বরং গো মাতাকে রক্ষা করাই হিন্দুদের আসল ধর্ম।

পাঁচ) শ্রী চৈতন্য মহাপ্রভু বলেছেন “যারা গোমাংস ভক্ষণ তাদের সকলকেই নরকে নিমগ্ন থাকতে হয়”।

মানসিক যুক্তিঃ

হিন্দু ধর্মে গো মাংস না খাওয়ার নেপথ্যে কিছু মানসিক কারণ রয়েছে। হিন্দুরা মনে করেন গরু ভগবানের প্রতীক। তার মধ্যেও প্রাণ আছে, আত্মা আছে। তার প্রাণ কেড়ে নেওয়াটা অন্যায়। গরুর ক্ষতি করলে, ভগবান অসন্তুষ্ট হবেন। এই সমস্ত মানসিক কারণেও হিন্দুরা গোমাংস ভক্ষণ থেকে বিরত থাকেন।


Posted

in

by

Tags:

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *