জানেন ভারতের শেষ রাস্তা কোনটি? যেখানে সন্ধ্যার পর একটি প্রাণীও যায় না, রাস্তাটির নাম কি? কোন শহরে অবস্থিত এই রাস্তা?

জানেন ভারতের শেষ রাস্তা কোনটি? যেখানে সন্ধ্যার পর একটি প্রাণীও যায় না, রাস্তাটির নাম কি? কোন শহরে অবস্থিত এই রাস্তা?

জানেন ভারতের শেষ রাস্তা কোনটি?
যেখানে সন্ধ্যার পর
একটি প্রাণীও যায় না!

অন্ধকার, নির্জন, রাত হলেই
অতৃপ্ত আত্মার আনাগোনা

রাস্তাটির সঙ্গে জড়িয়ে ভগবান রামচন্দ্র
বিশ্বের সবচেয়ে ছোট্ট স্থানে অবস্থিত
না দেখলে বিশ্বাসই হবে না

কেমন দেখতে রাস্তাটি?
কি নাম?
কোন শহরে অবস্থিত এই রাস্তা?

ভারতে রহস্যময় স্থানের শেষ নেই। তালিকাটি দীর্ঘ লম্বা। এখানে এমন অনেক স্থান রয়েছে, যেগুলো সম্পর্কে জানলে আপনি ভিমরি খাবেন। তার মধ্যে রয়েছে একটি রহস্যময় রাস্তা। একে ভারতের শেষ রাস্তা হিসেবেই মানা হয়ে আসছে। যেটি শেষ হয়েছে শ্রীলঙ্কার কাছে এসে। রাস্তাটির নাম ধনুশকোড়ি। এখান থেকে শ্রীলঙ্কার সীমান্ত দেখা যায়। রহস্যময় এই স্থানটি বর্তমানে জনবসতিহীন ও ভারতের অন্যতম দর্শনীয় স্থান। এই স্থানে মানুষের পক্ষে পৌঁছানো কঠিন। এটি মূলত একটি গ্রাম এবং ভারত ও শ্রীলঙ্কার মধ্যে অবস্থিত একমাত্র স্থলসীমানা। এই রাস্তা ধরে শ্রীলঙ্কা থেকে ধনুশকোড়ির দূরত্ব মাত্র ৩১ কিলোমিটার। রাস্তাটি থেকে স্পষ্টভাবে দেখা যায় শ্রীলঙ্কা। ধনুশকোড়ি মাত্র ৪৬ মিটার জুড়ে বিস্তৃত। এই স্থানটি বিশ্বের সবচেয়ে ছোট স্থান হিসেবেও তকমা পেয়েছে। অনেকেই বলেন জায়গাটি ভূতুড়ে। ফলে অনেকেই এই স্থানে আসতে ভয় পান। প্রতিদিন অসংখ্য পর্যটক এখানে দিনের বেলায় এলেও রাত হওয়ার আগেই স্থানটি ছেড়ে তাদের ফিরে যেতে হয়।

এই স্থানটিতে পৌঁছানোও বেশ কঠিন। কারণ এখানে পৌঁছাতে হলে মূল ভূখণ্ড থেকে পাম্বার দ্বীপ অতিক্রম করতে হয়। মাঝে পার হতে হয় বেশ কয়েকটি গ্রাম। রামেশ্বরম থেকে এর দূরত্ব মাত্র ১৫ কিলোমিটার। জায়গাটি ভীষণ নির্জন বিধায় এখানে থাকা কিংব রাতে ঘুরে বেড়ানো সম্পূর্ণরুপে নিষিদ্ধ। তবে গ্রামটি পূর্বেও জনমানসশূন্য ছিল এমনটা নয়। এককালে আর ১০ টা গ্রামের মতই ছিল ধনুশকোড়ি। বিদ্যালয়, হাসপাতাল, চার্চ সবই ছিল এই গ্রামে। কিন্তু ১৯৬৪ সালের ভয়ংকর সাইক্লোনের কারণে জনমানবশূন্য হয়ে পড়ে এই গ্রাম। ধারণা করা সে বছর ভয়াবহ সাইক্লোনের কারণে বহু লোক প্রাণ হারায়। বলা হয়ে থাকে, প্রায় ১০০ জন যাত্রীবাহী একটি ট্রেনও নাকি এই সাইক্লোনের ফলে সমুদ্রে ডুবে যায়। সেই থেকেই পরিত্যক্ত এই গ্রাম।

লোকমুখে শোনা যায়, এখানে অতৃপ্ত আত্মারা ঘুরে বেড়ায়। অবশ্য গ্রামটির আশে পাশে, বিশেষ করে রামেশ্বরম দ্বীপে প্রায় ৫০০ জন জেলে ৫০ টি কুড়ে ঘরে বসবাস করে। ধনুশকোড়ি মূলত জেলেদের বাসস্থান। ধনুশকোড়ি নামটির পেছনেও রয়েছে ইতিহাস। ধনুশকোড়িতেই নাকি ভগবান রাম ও তার সেনাবাহিনী লঙ্কায় যাওয়ার জন্য রাম সেতু তৈরি করেছিলেন। হিন্দুদের বিশ্বাস,ভগবান রাম সীতাকে লঙ্কা থেকে উদ্ধার করে চলে যাওয়ার সময়, তার ধনুকের ডগা দিয়ে সেতুটি ধ্বংস করে। ঠিক এই কারণেই শহরটির নাম হয় ‘ধনুশকোড়ি’। যার অর্থ ধনুকের শেষ ভাগ। বর্তমানে সেতুটি ভারতের রামেশ্বরম দ্বীপের সঙ্গে শ্রীলঙ্কার মান্নার দ্বীপের সংযোগ স্থাপন করেছে। সেতুটি অ্যাডামস ব্রিজ নামেও পরিচিত।


Posted

in

by

Tags:

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *