দুর্ঘটনাগ্রস্থ ট্রেনের কামরায় আটকে পড়েছেন? কি করবেন এই মুহূর্তে? কীভাবে প্রাণ বাঁচাবেন? ৩ মিনিটেই জানুন, ৬টি সহজ টিপস
দুর্ঘটনাগ্রস্থ ট্রেনের কামরায়
আটকে পড়েছেন?
কি করবেন এই মুহূর্তে?
কীভাবে প্রাণ বাঁচাবেন?
বেরিয়ে আসবেনই বা কীভাবে?
মাত্র ৩ মিনিটেই জেনে নিন
৬টি সহজ টিপস
এগুলো মানলেই বেড়ে যাবে
প্রাণে বাঁচার সম্ভাবনা
সম্প্রতি দেশে ঘটেছে শতাব্দীর সবচেয়ে ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনা, করমণ্ডল এক্সপ্রেস। যার ভয়াবহতা চিন্তা করলেই গায়ে কাঁটা দেয়। এই ঘটনার পর থেকেই বেশিরভাগ যাত্রীদের মধ্যেই ট্রেন সফরকে কেন্দ্র করে তৈরি হয়েছে মারাত্মক আতঙ্ক। অনেকেই ভয়ে ট্রেন যাত্রা বন্ধ রেখেছেন। তাদের জন্যই আজকের এই প্রতিবেদন। আজকের প্রতিবেদনে সহজভাবে জানানো হবে কীভাবে দুর্ঘটনাগ্রস্থ ট্রেন থেকে নিজেকে রক্ষা করবেন। বিপদ তো বলে কয়ে আসে না। তাই এই টিপসগুলো মাথায় রাখুন, প্রাণে অন্তত বাঁচতে পারবেন। ধরুন যাত্রাকালে আপনি যে ট্রেনটিতে আছেন, সেটি দুর্ঘটনার কবলে পড়েছে। আপনিও বাজে ভাবে আটকা পড়ে গেছেন দুর্ঘটনাগ্রস্থ ট্রেনের ভিতরে। উদ্ধারকার্য ঠিক কখন শুরু হবে কেউ জানেন না! এটি এমনই একটি মুহূর্ত কেউ কাউকে সাহায্যের জন্য সহজে এগিয়েও আসতে পারবেন না। চারিদিকে অন্ধকার। লণ্ডভণ্ড সমস্তকিছু। বাঁচার জন্য জীবিত মানুষের আর্তনাদ। এমন একটি পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে কীভাবে বাঁচাবেন নিজেকে, কীভাবে বাঁচাবেন অন্যদের, কীভাবে উদ্ধার করবেন দমবন্ধকর ট্রেনের কামরা থেকে। রইল কয়েকটি মূল্যবান টিপস। যা আপনাকে দুমড়ে মুচড়ে যাওয়া ট্রেনের কামরা থেকে কম ক্ষতিগ্রস্থ ও জীবিত অবস্থায় বের হতে সাহায্য করবে।
এক – মাথা থেকে সবার আগে ঝেড়ে ফেলে দিন, ট্রেন যাত্রা সম্পর্কে যাবতীয় ভয় ও দুঃস্বপ্ন। অনেকেই এটা ভাবেন, এই বুঝি ট্রেন দুর্ঘটনা ঘটবে। এমনটা একেবারেই নয় যে আপনি যে ট্রেনে উঠবেন সেই ট্রেনই দুর্ঘটনার কবলে পড়বে। অনেকেই এই চিন্তায় সফরের আনন্দকে মাটি করে ফেলেন। যা একেবারেই অনুচিত। আর যাত্রাকালে এই ধরনের কুচিন্তা মনে আনা ভুল কাজ। তাই নির্ভয়ে ট্রেনে উঠুন। তবে সবসময় মানসিক প্রস্তুতি নিয়ে থাকা ভালো।
দুই – এবার শুনুন, যদি আচমকা কখনও ট্রেন দুর্ঘটনার কবলে পড়েন, সবার প্রথমে মাথা ঠাণ্ডা রাখুন। মনকে শক্ত করুন। পরিস্থিতি বোঝার চেষ্টা করুন। নিজেকে বোঝান সকলেই আপনার মত ভাগ্যবান। আপনি দুর্ঘটনার কবলে পড়েও এখনও প্রাণে বেঁচে আছেন। এবার ধীরে ধীরে চেষ্টা করুন, আত্মীয় স্বজন আপনজনদের খোঁজ নেওয়ার। খেয়াল করুন আপনি নিজে ও কাছের মানুষেরা কতটা অক্ষত রয়েছেন। চেষ্টা করুন হাতের কাছে যা পাচ্ছেন তাই দিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার। অন্তত প্রাথমিকভাবে নিজেদের শুশ্রূষা করুন। এই মুহূর্তটি সবচেয়ে ভয়ংকর একটি অভিজ্ঞতা হবে। কিন্তু বিচলিত হলে চলবে না। মনকে স্থির রেখে, পূর্বের অভিজ্ঞতা দিয়ে পরস্থিতির মোকাবিলা করুন।
তিন- এই সবের মাঝে গুরুত্বপূর্ণ একটি কাজ, নিজের ফোন খুঁজে বার করা। যদি ফোন নিজের কাছে থাকে খুবই ভালো। এরপর ফোনে চার্জ আছে কিনা দেখুন। যদি ফোন চালু থাকে চেষ্টা করুন, কাছের মানুষদের সাথে যোগাযোগ করার। আত্মীয় স্বজন, বন্ধু বান্ধব, পুলিশ প্রশাসন, আপৎকালীন উদ্ধার কর্মীদের কাছে নিজের অবস্থান জানানোর যথাসাধ্য চেষ্টা করুন। সকলের কাছে নিজের বিপদের কথা পৌঁছে দিন। শান্ত হয়ে অপেক্ষা করুন, উদ্ধারকারী দলের জন্য। ভরসা রাখুন নিজের উপর।
চার- এই ধরনের পরিস্থিতিতে আপনি যত বেশি ধৈর্য রাখবেন, তত বেশি পরিস্থিতি আপনার নিয়ন্ত্রণে থাকবে। এই সময় খেয়াল রাখবেন, উদ্ধারকারী দল বেশে অনেক সময় লুঠেরার দলও চলে আসে ঘটনাস্থলে। এক্ষেত্রে যারা যারা পারবেন, তারা সকলে মিলে দুষ্কৃতিদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলুন।
পাঁচ- সবচেয়ে মোক্ষম কাজটি বাকি রয়েছে গিয়েছে। সেটি হল এবার আপনাকে খুঁজে বার করতে ট্রেনের ইমারজেন্সি এক্সিট। চেষ্টা করুন ইমারজেন্সি এক্সিট দ্রুত খুঁজে বের করার। একবার পেয়ে গেলেই সময় নষ্ট না করেই সেগুলো খোলার চেষ্টা করুন। ট্রেন দুর্ঘটনায় প্রাণ বাঁচাতে ভূমিকা রাখেন এই ইমারজেন্সি এক্সিট। এটি একটি জানালার মতন। তবে যে কোনও ট্রেনেই এটি খোলার সিস্টেম অন্যান্য জানালার থেকে আলাদা। তবে চিন্তার কিছুই নেই। ইমারজেন্সি এক্সিটের পাশেই এটি খোলার নির্দেশিকা দিয়ে থাকে। ফলে সেই নির্দেশিকা দেখেই আপনি ইমারজেন্সি এক্সিট ব্যবহার করতে পারেন। দুর্ঘটনাগ্রস্থ ট্রেন থেকে বের হওয়ার সবচেয়ে সহজ মাধ্যম এই ইমারজেন্সি এক্সিট। এক নজরে দেখুন কীভাবে খোলা হয় এসি কামরার ইমারজেন্সি এক্সিট –
ফুটেজ
দেখুন সাধারণ কামরার ইমারজেন্সি এক্সিট খোলা হয়-
ফুটেজ
ছয়- এগুলো ছাড়াও লক্ষ্য রাখুন উদ্ধারকারী সংস্থা আপনার কাছাকাছি পৌঁছেছে কি না। যদি পৌঁছে থাকে, তাহলে তাদের নির্দেশ অনুসরণ করে, সেইভাবে রেসপন্স করুন। এই স্টেপগুলো অনুসরণ করলে বিপদগ্রস্থ ট্রেন থেকে বাঁচার সুযোগ অন্তত তৈরি করতে পারবেন।
Leave a Reply