জানেন বিপত্তারিণী পুজোয় ১৩টি গিঁটের লাল সুতো কেন পরা হয়? সুতোটির অপার মহিমা, চমকে দেবে আপনাকেও
জানেন বিপত্তারিণী পুজোয়
১৩টি গিঁটের লাল সুতো
কেন পরা হয়?
এই সুতো হাতে বাঁধলেই
ঘটে অলৌকিক কর্মকাণ্ড
বহু অজানা তথ্য
শোনা যায় সুতোটি সম্পর্কে
যা অনেকে বিশ্বাসই করে না
সুতোটির অপার মহিমা
চমকে দেবে আপনাকেও
পরিবারের মঙ্গল কে না চায় বলুন তো! সকলেই চায় নিজ নিজ পরিবারের প্রতিটি মানুষই যেন সুস্থ থাকে, ভালো থাকে। কারো যেন অমঙ্গল কিংবা বিপদ না আসে। তাই প্রতিটি বাঙালী পরিবারের মঙ্গলের আশায় মা বিপত্তারিণীর শরণাপন্ন হয়। বাঙালীদের বিশ্বাস ভক্তদের সমস্ত রকম বিপদ আপদ, রোগ বালাই থেকে দূরে রাখেন শ্রী শ্রী মা বিপত্তারিণী। তাঁর কাছে মাথা ঠেকালে নাকি তিনি সমস্ত বিপদকে দূরে সরিয়ে দেন। ভক্তরা বিপদ থেকে বাঁচতে বিপত্তারিণী মায়ের পা ছোঁয়ানো লাল সুতো হাতে বাঁধেন। এই লাল সুতোয় থাকে ১৩টি গিঁট। সঙ্গে থাকে দূর্বা ঘাস। অনেক ভক্তকেই দেখা যায়, হাতের কব্জিতে, বাহুতে এই সুতো বাঁধতে। শুধু ১৩ গিঁটের সুতো নয়, এই পূজোর প্রসাদ থেকে শুরু করে,সমস্ত উপকরণ দেওয়া হয় ১৩টি করে। কিন্তু অনেকেই জানেন না, মা বিপত্তারিনীর পুজোয় অশুভ সংখ্যা ১৩কে কেন বেছে নেওয়া হয়। জেনে নিন, মা বিপত্তারিণীর সাথে ১৩ সংখ্যার যোগসূত্র আসলে কোথায়-
এক, হিন্দু শাস্ত্রমতে দেবী বিপত্তারিণীকে মা দুর্গার আরেকটি রুপ বলে মানা হয়। লোকশ্রুতিতে শোনা যায় দেবী বিপত্তারিণী প্রিয় সংখ্যা ১৩। এই কারণেই নাকি দেবী বিপত্তারিণীর পূজোয় সবকিছু ১৩টি করে দেওয়া থাকে। ফুল থেকে ফল সমস্ত উপকরণের প্রকারভেদ থাকে ১৩ সংখ্যার মধ্যে। তবে কোনও কিছুই ১৩টি বেশি হওয়া যাবে না। ১৩টির বেশি হলেই, মা বিপত্তারিণী অসন্তুষ্ট হতে পারেন বলেও শোনা যায়।
দুই, মা বিপত্তারিণীর পুজোয় হাতে যে ১৩ গিঁটের লাল সুতো পরা হয়, তার নেপথ্যেও রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ কারণ। হিন্দু ধর্মে লাল রংকে অলৌকিক শক্তির আঁধার মানা হয়। মা বিপত্তারিণীর পুজোয় লাল সুতোয় যে ১৩টি গিঁট দেওয়া হয়, এই ১৩টি গিঁটে নাকি ১৩টি মহাশক্তিশালী মন্ত্র উল্লেখ করা হয়। আবার অনেকেই বলেন ভক্তরা ১৩টি মনের আশা সুতোঁয় গিঁট বেঁধে বেঁধে বলে দেন। এই কারণগুলো ছাড়াও বিশ্বাস করা হয় লাল রঙের মধ্যে ঐশ্বরিক শক্তি থাকে। কারণ এক সময় দেবতা ও অসুরদের মধ্যে প্রচণ্ড যুদ্ধ শুরু হয়। সেই যুদ্ধ থামাতে দেবরাজ ইন্দ্র তাঁর আধ্যাত্মিক শক্তি দিয়ে একটি লাল সুতো তৈরী করেন। সেই সুতো পরেই দেবতারা এই যুদ্ধ থামাতে সক্ষম হয়। পুরানেও লাল রংকে,লাল সুতোকে খুবই প্রাধান্য দেওয়া হয়। তাছাড়া বিশ্বাস করা হয় এই লাল সুতোঁ হাতে বাঁধলে সমস্ত বিপদ আপদ দূরে থাকে। এই সুতোর জেরে ভগবান স্বয়ং ভক্তকে রক্ষা করতে মর্তে নেমে আসেন।
তিন, একই সাথে অনেক ভক্তবৃন্দের বিশ্বাস, ১৩ যেহেতু একটি অশুভ সংখ্যা, তাই এই সংখ্যাকে শুভ করে তুলতেই মা বিপত্তারিণীর পূজোয় ১৩ সংখ্যাটিকে প্রাধান্য দেওয়া হয়। ভক্তদের মনে কোনও রকম কুচিন্তা, নেতিবাচক ধারণা যাতে বাসা না বাঁধে তাই ১৩কে কেন্দ্র করেই মা বিপত্তারিণীর পুজা করা হয়। অর্থাৎ ভক্তদের আত্মবিশ্বাসী ও কুসংস্কার মুক্ত করতেই মায়ের পূজোয় এই রীতি চালু হয়।
Leave a Reply