রেলস্টেশনের কুলি এখন আইএএস অফিসার! গুগল ওয়াইফাই বদলে দিয়েছে তাঁর জীবন!

Title: রেলস্টেশনের কুলি এখন আইএএস অফিসার! গুগল ওয়াইফাই বদলে দিয়েছে তাঁর জীবন!

Focus:

রেলস্টেশনের কুলি
এখন আইএএস অফিসার!

গুগল ওয়াইফাই বদলে
দিয়েছে তাঁর জীবন!

একসময় যে মাথা বহন
করত বড় বড় বোঝা!

এখন তার মাথার উপর দেশ
সামলানোর গুরু দায়িত্ব!

অভাবকে দূরে ঠেলে কিভাবে লক্ষ্যে
পৌঁছানো যায় তা শ্রীনাথ দেখিয়ে দিয়েছেন!

Body:

শাহরুখের খানের একটা ডায়লগ আছে, আগর কিসি চিজ কো দিল সে চাহো তো পুরি কায়ানাত উসে তুমসে মিলানে কি কোশিশ মে লগ জাতি হ্যায়। ঠিক তেমনটাই ঘটেছে শ্রীনাথের সঙ্গে। আজকের দিনে এই ঘোড়ার দৌঁড়ে প্রতিযোগিতা করার লড়াইয়ে সকলকে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন এই ব্যক্তি। ইউপিএসসি ক্র্যাক করে দেখিয়েছেন। অনেকেই বলবেন এতে এমন কি হয়ে গেছে? কতই পরীক্ষার্থী তো করছে এতে আবার নতুন কি?

এই একটি মাত্র পরীক্ষা যেখানে পাশ করতে গেলে আচ্ছা আচ্ছা ইন্টেলিজেন্ট কিংবা নামিদামি প্রতিষ্ঠান থেকে পাশ করা ছাত্র-ছাত্রীরাও ফেল করে যায়। ভাগ্যের জোরে কেউ কেউ কাঙ্ক্ষিত ফলাফল পেয়ে গেলেও। সকলে কিন্তু এই পরীক্ষায় টিকে থাকতে পারেন না। হ্যাঁ একজন ইউপিএসসি পরীক্ষার্থীর ক্ষেত্রে শুধু মেধা কিংবা জেদ নয় সাথে প্রয়োজন পড়ে অর্থেরও। আর অর্থ না থাকলে অনেক ক্ষেত্রে পিছিয়ে পড়তে হয়। তবে অর্থ থামিয়ে রাখতে পারেনি শ্রীনাথকে।

আজ তিনি আইএএস অফিসার হলেও। একসময় তিনি ছিলেন কুলি। সংসারের হাল ধরতে বেছে নিতে হয় এই কাজ। শ্রীনাথ হলেন কেরলের মুন্নারের বাসিন্দা। একবারেই হতদরিদ্র পরিবার থেকে উঠে এসেছেন। নুন আনতে পান্তা ফুরানোর জোগাড়। মাথার উপর কোনওরকমের ছাদটুকু রয়েছে। অভাব, অনটন নিত্যদিনের সঙ্গী। রোজগার করার মতন রয়েছে শুধুমাত্র শ্রীনাথ। বাড়ির সকলের মুখে দুটো খাবার তুলে দেওয়ার জন্য সকাল থেকে রাত্রি কুলিগিরি করে যেতেন। বিন্দুমাত্র বিশ্রাম নেওয়ার ফুরসৎ ছিল না তাঁর। কেরলের এর্নাকুলাম রেল স্টেশনে কুলির কাজ করতেন শ্রীনাথ। টানা পাঁচবছর এই কুলির কাজ করেন। দিনরাত এই কাজ করে হাতে আসতো ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা। তাতে করে সংসারে বেশিরভাগটাই চলে যেত। কিন্তু চোখে তাঁর বিরাট স্বপ্ন। একদিন আইএএস অফিসার হবেন। তবে সমস্যা হয়ে দাঁড়ায় অর্থ। এইটুকু টাকা নিয়ে বড় বড় প্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করা অলীক স্বপ্ন।

সেই সময় দাতা কর্ণ হিসেবে তার পাশে দাঁড়ায় ওয়াইফাই। আজকালকার দিনে বিজ্ঞানকে আশীর্বাদ নাকি অভিশাপ জিজ্ঞেস করলে। সকলেই বলে অভিশাপ। কিন্তু শ্রীনাথের কাছে তা আশীর্বাদ। ততদিনে শ্রীনাথের বিয়েও হয়ে গিয়েছে, এমনকি এক সন্তানের বাবাও হয়ে উঠেছিলেন তিনি। সময়টা ২০১৬ সাল তখন মুম্বই স্টেশনে শুরু হল ফ্রি ওয়াই ফাই পরিষেবা। এরপর একে একে সমস্ত বড় বড় স্টেশনে চালু হয় এই পরিষেবা। সেখান থেকে বাদ পড়েনি, কেরলের এর্নাকুলাম স্টেশনও। আর এই ওয়াইফাই এর দৌলতে ভাগ্যের চাকা ঘুরতে থাকে শ্রীনাথের। ওয়াইফাই দিয়ে তিনি ফ্রি টাইমে ইউপিএসসির প্রস্তুতি নিতে থাকেন। সেই স্টেশনের কুলিরা যখন জানতে পারে শ্রীনাথের এই স্বপ্নের কথা। তারাও এই বিষয়ে তাকে সহযোগিতা করতে থাকেন।

একবারের জন্যও পিছন ফিরে তাকাননি। হাজারো প্রতিকূলতার মাঝে প্রথমবার তিনি কেরল পাবলিক সার্ভিস কমিশনের সরকারি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছিলেন। তার অধ্যবসায়, নিষ্ঠা, প্রথম চেষ্টাতেই কেরল পাবলিক সার্ভিস কমিশনের একজন কর্মচারী করে তোলে। এই কর্মচারী পদে নিযুক্ত হওয়ার পর শ্রীনাথের আর্থিক অবস্থা কিছুটা সচ্ছল হয়। কিন্তু তার খিদে যে অনেকটা। এখানে কাজ করার সাথে সাথে চালিয়ে যান ইউপিএসসি প্রস্তুতি। একবার দুবার তিনবার ব্যর্থ। চতুর্থবারে সকলকে তাক লাগিয়ে দিয়ে ইউপিএসসি পরীক্ষায় সফলতা লাভ করেন। শুধু তাই নয় সেইসাথে তিনি পেয়েছিলেন প্রায় ৮২ শতাংশ নম্বর। এখন শ্রীনাথ দেশের অন্যতম আইএএস অফিসার। একসময় সাহেবদের ব্যাগ যে টেনে নিয়ে যেত। এখন তাকে দেখলে স্যালুট করছে সকলে।

ইচ্ছেশক্তি, জেদ মানুষকে কোথায় এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে তা দেখিয়ে দিলেন শ্রীনাথ।


Posted

in

by

Tags:

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *