Title: ব্রিটানিয়ার দিন ফুরালো! শৈশবের ইতি টানলো! বাংলার বুকে ঝাঁপি বন্ধ হলো আরো এক বড় শিল্পের!
Focus:
ব্রিটানিয়ার দিন
ফুরালো!
শৈশবের ইতি
টানলো!
বাংলার বুকে ঝাঁপি বন্ধ
হলো আরো এক বড় শিল্পের!
আবারো হাহাকার
শুরু কর্মচারীদের!
হঠাৎ হলোটা কি?
৭৭ বছরের শিল্পও
কেন বন্ধ হলো?
Body:
ব্রিটানিয়ার নাম উঠলেই মনে আসে ‘দাদু খায় নাতি খায় ‘ এই ক্যাপশনটি। কিন্তু এখন সেসব অতীত। এখন থেকে আর পাওয়া যাবে না ব্রিটানিয়ার স্বাদ আর গন্ধ। বাঙালির স্বাদে, পছন্দে এবার বড়সড় আঁচড়। চিরতরে বন্ধ হয়ে গেলো ব্রিটানিয়ার ঝাঁপ। একেই দিনের পর দিন এই পশ্চিমবঙ্গ জুড়ে চাকরীহারাদের হাহাকার। এই দুর্নীতিগ্রস্ত রাজ্যে চাকরী চাই চাকরী চাই বলে প্রতিনিয়ত মানুষ চিৎকার করে যাচ্ছে। আর তারই মাঝে আবারো একটি বড় শিল্পের পতন। আবারো চাকরীহারা শয়ে শয়ে শ্রমিক। কি করবে তারা? কোথায় যাবে? কি হবে তাদের অনিশ্চয় ভবিষ্যৎ? কেনো বন্ধ হলো ব্রিটানিয়া? প্রশ্ন উঠছে একাধিক।
ভোটের আবহ মিটতে না মিটতেই বাংলার কর্মচারীরা মুখ থুবড়ে পড়ল। আপনাদের জানিয়ে রাখি ভারত স্বাধীন হওয়া কালীন ১৯৪৭ সালে ব্রিটানিয়া কোম্পানিটি তৈরি হয়। এটি প্রথম চালু হয় মুম্বাইয়ে। এরপরেই কলকাতার তারাতলায় কারখানাটি চালু হয়। সেই থেকে কেটে গেছে ৭৭ বছর। এরপর হঠাৎই ছন্দপতন এত বড় কোম্পানির। তথ্যসূত্রে জানা গিয়েছে, এই কোম্পানিতে কারখানার স্থায়ী কর্মী হিসেবে নিযুক্ত ছিলেন ১২২ জন। এবং অস্থায়ী কর্মী হিসেবে নিযুক্ত ছিলেন ২৫০ জন। কিন্তু স্থায়ী কর্মীরা ক্ষতিপূরণ পেলেও,,,,,, অস্থায়ী কর্মীরা কিন্তু কোন রকমের ক্ষতিপূরণ পাননি। এর ফলেই শুরু হয়েছে জলঘোলা। এমনকি মাথায় হাত পড়েছে অস্থায়ী কর্মীদের। হঠাৎ করে চাকরি যাবার কারণে কোথায় পাবেন চাকরী। এই চাকরি মন্দার বাজারে চাকরি পাওয়া তো আর সহজ বিষয় নয়। অন্যদিকে আবার এককালীন ক্ষতিপূরণ পেয়ে গেছেন স্থায়ী কর্মচারীরা। তথ্যসূত্রে জানা গিয়েছে, যে সমস্ত কর্মচারীরা দশ বছরের বেশি সময় ধরে কাজ করতেন। তাদেরকে এককালীন হিসেবে ২২ লক্ষ ২৫ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে যারা ৬ বছরের নীচে কাজ করেছেন, তাদের ১৮ লক্ষ ৭৫ হাজার টাকা দিয়েছে কোম্পানি। আর যারা তার চেয়েও একটু কম সময় ধরে কাজ করতেন তাদেরকে ১৩ লক্ষ ২৫ হাজার টাকা করে দিয়েছে ব্রিটানিয়া।
তথ্যসূত্রে আরো জানা যায়, প্রতিবছর এই কোম্পানিতে আড়াই হাজার টন দ্রব্য উৎপাদন হতো। কিন্তু এদিন কর্মীরা কাজে গিয়ে হঠাৎ করেই দেখেন কারখানার গেটে সাসপেনশন অফ ওয়ার্কারের নোটিশ ঝুলছে। কিন্তু ঠিক কি কারণে এমন হঠাৎ বন্ধ হলো তাও কিন্তু এখনো স্পষ্ট নয়। সেভাবে কোনো কর্মচারীরাও মুখ খুলতে নারাজ। তথ্যসূত্রে জানা গিয়েছে, প্রতিযোগিতায় তারা টিকে থাকা অসম্ভব হয়ে উঠেছে। আজকাল বাজারে লাভের মুখ কোম্পানি কোন ভাবে দেখছিল না। তাই এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে ব্রিটানিয়া কোম্পানি। কোম্পানি তো বন্ধ হয়ে গেলে! কিন্তু বাংলার শিল্পের জন্য যে এটি যে একটি বড় দুঃসংবাদ তা বলতে বাকি রাখে না।
তবে জানিয়ে রাখি এটি কিন্তু নতুন বিষয় নয়, এর আগে মুম্বাই এবং চেন্নাইতে পুরোনো কারখানা বন্ধ করেছে ব্রিটানিয়া। এখন বাংলায় ঝাঁপি সারাজীবনের জন্য বন্ধ হল। তবে এই নিয়ে চুপ থাকেন নি রাজনীতিবিদরা। তারা এই বিষয়ে সরব হয়েছেন। বিজেপির সাংসদ সুকান্ত মজুমদার বলেন, এটা নতুন কিছু নয়! আগামী দিনে আরো কারখানা বন্ধ হবে,,, আরো মানুষ চাকরি হারা হবে। আসলে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যেভাবে শিল্পবিরোধী চিত্র তৈরি করেছেন তাতে এই রাজ্যে কখনোই শিল্প আসবে না। বরং আরো বড় বড় শিল্প কারখানা গুলি বন্ধ হয়ে যাবে। সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন বাংলা শিল্পে আবারো একবার ধাক্কা। এর আগে একাধিকবার এই প্রসঙ্গে উঠে এসেছে। কিন্তু কেউ এ বিষয়ে মাথা ঘামান নি। আসল কথা হচ্ছে শিল্প বাঁচানোর কোন আগ্রহই নেই। যার জন্য আজ ব্রিটানিয়ার মত বাঙালির আবেগও শেষ পর্যন্ত ইতি টানলো। এরকম নানা মন্তব্য উঠে আসছে রাজ্য রাজনীতি মহল থেকে।
Leave a Reply