কাঞ্চনজঙ্ঘা এবং মালগড়ির ভয়াবহতার পিছনে কি রয়েছে কবচ?

Title: কাঞ্চনজঙ্ঘা এবং মালগড়ির ভয়াবহতার পিছনে কি রয়েছে কবচ? কবচের অনুপস্থিতিতেই এত মানুষের প্রাণ সঙ্কটে! কি এই কবচ?

Focus:

কাঞ্চনজঙ্ঘা এবং মালগড়ির
ভয়াবহতার পিছনে কি রয়েছে কবচ?

এর অনুপস্থিতিতেই আজ
এত মানুষের প্রাণ সঙ্কটে!

কি এই কবচ?

কিভাবে মানুষের
প্রাণ বাঁচায় এটি?

ট্রেনের কোথায় ব্যবহার
করা হয় এই রক্ষা কবচ?

দেখুন

Body:

সপ্তাহের শুরুতেই ভয়ঙ্কর দূর্ঘটনার সাক্ষী হতে হলো পশ্চিমবঙ্গবাসীকে। কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস এবং মালগাড়ির তীব্র সংঘর্ষ নিমেষের মধ্যে বাংলার চিত্র বদলে দিয়েছে। পিছন থেকে এসে এক্সপ্রেসকে ধাক্কা দিয়েছে মালগাড়ি। দুমড়ে মুচড়ে গিয়েছে একের পর এক কামরা। গা শিউরে দেওয়ার মত দূর্ঘটনা। তবে এ ঘটনা আজকের নয়, একটু রিভার্স করে দেখুন। এরকম সময়ই করমণ্ডল এক্সপ্রেসের দূর্ঘটনাটি ঘটে। আর এই একের ওপর এক দূর্ঘটনার জেরে তৈরি হয়েছে একগুচ্ছ প্রশ্ন। কিভাবে ঘটলো দূর্ঘটনাটি? কিসের ত্রুটি? কিসের গাফিলতি? আর এই সময় মাথাচাড়া দিয়েছে ট্রেনের কবচ সিস্টেমকে নিয়ে। বারবার এই সিস্টেমকেই দুষছে সকলে। এই নিয়ে নড়েচড়ে উঠেছে প্রশাসনও। এই কবচের জেরে আজ হাজার হাজার মানুষের প্রাণ সঙ্কটের দুয়ারে। কি এই কবচ? কেন এই কবচকে নিয়ে এত মাতামাতি।

সবার আগে জেনে নিই ট্রেনের কবচ আসলে কি? কিভাবে ট্রেনকে বিপদের হাত থেকে বাঁচায়?

আমরা কবচ শব্দটির সাথে পরিচিত। এর মাধ্যমে নানা ধরনের বিপদ এড়ানো যায়। তেমনই হচ্ছে ট্রেনের রক্ষা কবচ। এই সিস্টেমটি হলো একটি অটোমেটিক ট্রেন প্রটেকশন সিস্টেম। এই কবচ থাকলে বড় বড় দূর্ঘটনা অনায়াসে কাটানো যায়। এই সিস্টেমটি সর্বোচ্চ সুরক্ষা স্তরের পক্ষ থেকেও গ্রিন ফ্ল্যাগ পেয়েছে। কোনো কারণে যদি একই লাইনে দুটি ট্রেন চলে আসে। সঙ্গে সঙ্গে চালকে বার্তা পাঠিয়ে সতর্ক করে দেয় কবচ। তারপরও যদি ট্রেনের লোকো পাইলট নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ব্রেক কষতে না পারে। তখন এই কবচ স্বয়ংক্রিয়ভাবে ট্রেনের গতিতে দাঁড়ি টানে। এরফলে ট্রেনের গতি কমতে থাকে। এই সিস্টেমটি তৈরি করা হয়েছে অত্যন্ত উন্নতমানের প্রযুক্তির সাথে। এতে রয়েছে মাইক্রোপ্রসেসর, গ্লোবাল পজিশনিং সিস্টেম, RFID অর্থাৎ রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি আইডেন্টিফিকেশন ট্যাগ। এগুলি ট্রেনের অবস্থান এবং গতি চিহ্নিত করে। এগুলি মূলত বসানো হয় রেলট্র্যাকে, স্টেশন ইয়ার্ডে এবং সিগন্যালে।

এই সিস্টেমগুলি সক্রিয় থাকলে যদি একই লাইনে অন্তত ৫ কিলোমিটার দূরে আরো একটি ট্রেন চলে আসে। সঙ্গে সঙ্গে একটি ট্রেন দাঁড়িয়ে পড়ে। যতক্ষণ না অপর ট্রেনটি নিরাপদ দূরত্বে যাচ্ছে ততক্ষণ ট্রেনটি দাঁড়িয়ে থাকে। এভাবেই বড় বড় দূর্ঘটনা রোধ করা যায়। শুধু তাই নয় এই কবচের সাথে যুক্ত রয়েছে অন বোর্ড ডিসপ্লে অফ সিগন্যাল অ্যাক্সপেক্ট সিস্টেম। এরফলে ঝড়-বৃষ্টি কুয়াশাতেও স্পষ্টভাবে চালক সিগন্যাল দেখতে সক্ষম হন। তাহলে বুঝতেই পারছেন এটা ঠিক কতটা কার্যকর।

আর এখন প্রশ্ন উঠছে কবচ সিস্টেম কি এখনো বাংলায় কার্যকর করা হয়নি?

এই বিষয়ে স্পষ্ট জানিয়েছে রেলবোর্ডের প্রধান। তিনি জানান, এখনো পর্যন্ত গুয়াহাটি-দিল্লি লাইনে এই প্রযুক্তি বসানো শুরু হয়নি। ধাপে ধাপে তা কার্যকর করা হবে। ভারতের রেললাইন দৈর্ঘ্য প্রায় ১ লক্ষ কিলোমিটারেরও বেশি। আর সেখানে এখনো পর্যন্ত মাত্র ১৫০০ কিলোমিটারের পথে কবচ রয়েছে। তিনি আরো জানান, এই বছর ৩০০০ কিলোমিটার রেলপথে এই সিস্টেম বসে যাবে। আর সেই তালিকায় রয়েছে আমাদের বাংলাও। এখনোও পর্যন্ত না বসলেও খুব শীঘ্রই এই সিস্টেম বসতে চলেছে।


Posted

in

by

Tags:

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *