Title: মাধ্যমিকে ফেল, উচ্চমাধ্যমিকেও ফেল! আর আজ IAS অফিসার হয়ে দেশ চালাচ্ছেন এই মহিলা!
Focus:
টুয়েলভ ফেল গল্পের
মনোজ শর্মাকে সকলেই চেনেন!
কিন্তু IAS অফিসার
অঞ্জু শর্মাকে কি কেউ চেনেন?
যিনি মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক
উভয় ক্লাসেই ব্যর্থ?
পরীক্ষার খাতায় পেয়েছেন
লাল কালির দাগ!
আর আজ সেই
মেয়ে দেশ চালাচ্ছে,
বড় বড় নেতা, আমলাদের
সঙ্গে মিটিং করছেন!
ব্যর্থতাই সাফল্যের মূল চাবিকাঠি
প্রমাণ করে দিলেন তিনি!
Body:
আরে আপনার মেয়ে ফেল করছে? বিয়ে দিয়ে দিন বেশি দিন বাড়ি রাখতে হবে না। বেকার ঘাড়ে ঝুলিয়ে রেখে শুধু টাকা ধ্বংস! ওর দ্বারা আর কিচ্ছু হবে না। পরীক্ষায় খারাপ ফল করলে এমনই কথা শুনতে হয় মেয়েদের। আর এমন গঞ্জনারও শিকার হতে হয় অঞ্জু শর্মাকে। পাড়ার প্রতিবেশীরা, আত্মীয়রা তাঁর বাবা মাকে এমন কথাই বলতো। তবে অঞ্জু তো অঞ্জুই নাছোড়বান্দা মেয়ে। ব্যর্থতা কি সেই সংজ্ঞা তার জানা নেই। তিনি শুধু জানেন পরিশ্রম করতে। তাই তো তো তিনি আজ দেশের সফল আইএএস অফিসার।
তবেআজ সাফল্য হাতের মুঠোয় থাকলেও। একসময় পার করতে হয়েছে নানা বাঁধা বিপত্তি। শূন্য থেকে শুরু করেছেন নিজের লড়াই। অঞ্জু তখন ক্লাস টেনে পড়েন। সামনেই প্রিবোর্ড পরীক্ষা। বোর্ডের প্রথম পরীক্ষা তাই স্বাভাবিকভাবে মনে ভয় জেঁকে বসে। শুধু ভয় নয় সেইসাথে নিজের আত্মবিশ্বাসও হারিয়ে ফেলেন। কেমিস্ট্রি পরীক্ষার আগের দিন রাতে রীতিমতো কান্নাকাটি শুরু করে দিয়েছিলেন। আর এই ভয়ে তাঁর জীবনের ব্যর্থতার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। মাধ্যমিকে বোর্ড পরীক্ষার আগের প্রি বোর্ড পরীক্ষায় হারতে হয়েছিল কেমিস্ট্রির কাছে। রসায়নে তিনি ফেল করে যান। এখানেই শেষ নয়। এরপরে আরো বড় পরীক্ষা উচ্চমাধ্যমিক। সেইবার ইকোনমিক্সে পাশ করতে পারেননি। কিন্তু অন্যান্য সমস্ত বিষয় তার দুর্দান্ত নাম্বার ছিল। তবে ওই যে নিন্দুকেরা নিন্দা করবেই। সেই সময় আত্মীয়-স্বজন থেকে শুরু করে পরিবারের লোকেরা রীতিমতো উঠতে বসে খোঁটা দিতে শুরু করে। কিন্তু সেই সময় অঞ্জুর মা ঢাল হয়ে দাঁড়ান। তাকে সর্বদা সাহস যুগিয়ে যান। তাঁর মা একটাই কথা বলতেন হতাশ হয়ো না! বরং ব্যর্থতা থেকে শিক্ষা নাও কিভাবে ঘুরে দাঁড়াবে। আর সেই পথই অনুসরণ করে তিনি এগিয়ে যেতে থাকেন।
উচ্চ মাধ্যমিকের পর তিনি স্নাতক পাশের জন্য কলেজে ভর্তি হন। তবে কলেজে পড়াকালীন তিনি পড়াশোনার ধাঁচ বদলে দেন। একদিনে পড়ে না বরং পরীক্ষার আগে যাতে সিলেবাস শেষ হয়ে যায় সেই সূত্র ধরেই চলা শুরু করেন। একদিন যে মেয়েটা মাধ্যমিক উচ্চমাধ্যমিকে ফেল করেন সেই মেয়েটাই কলেজে গোল্ড মেডেলিস্ট হয়ে স্নাতক পাশ করেন। নিন্দুকদের মুখ একেবারে বন্ধ করে দেয়। এরপর এমবিএ পড়াশুনা শুরু করেন। এমবিএর পাশাপাশি তিনি ইউপিএসসির প্রস্তুতি নিতে থাকেন। এমবিএ পাস করার পর প্রথমবার ইউপিএসসি পরীক্ষায় বসেন। প্রথম চেষ্টাতেই ইউপিএসসি পাশ। সকলকে তাক লাগিয়ে দিয়ে ছিনিয়ে নেন IAS অফিসারের শিলমোহর। ১৯৯১ সালে রাজকোটে একজন সহকারী কালেক্টর হিসাবে তার কর্মজীবন শুরু হয়। এরপর বরোদায় বিডিও, গান্ধীনগরের জেলা কালেক্টর এবং শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সহ একাধিক জায়গায় কর্মরত ছিলেন। তবে বর্তমানে তিনি এখন সরকারি শিক্ষা অধিদপ্তরের সচিবালয়ের প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি পদে কর্মরত।
অঞ্জু শর্মার একের পর এক সাফল্য সকলকে বাকরুদ্ধ করে দিয়েছে। যারা বলতেন মাধ্যমিক উচ্চমাধ্যমিকে ভালো ফল না করলে জীবনে বড় হওয়া যায় না। তাদেরকে ভুল প্রমাণিত করে দিয়েছেন এই আইএস অফিসার অঞ্জু শর্মা। একটি সাক্ষাৎকারে জানান, আজ তাঁর এই সাফল্য শুধুমাত্র বাবা মায়ের জন্য। তিনি যতবার দিশা হারিয়েছেন ততবার সঠিক পথে চালনা করেছেন একমাত্র বাবা মা। শুধু তাই নয়, নিজের জীবনের ব্যর্থতা থেকে শিক্ষা নিয়েছেন। সঠিক সময় পড়া এগিয়ে রাখেননি বলেই শেষ মুহুর্তে নাকানি চোবানি খেতে হতো তাকে। তাই আগে নিজের জীবনের সেই ভুল শুধরে নিয়েছেন। এবং সকলের কটাক্ষের জবাব নিজের কাজের মাধ্যমে দিয়ে দিয়েছেন।
Leave a Reply