দক্ষিণেশ্বরের পাশে অবস্থিত এই মন্দিরটি, অনেকেই জানেন না এই জাগ্রত মন্দিরটির কথা

দক্ষিণেশ্বরের পাশে অবস্থিত এই মন্দিরটি, অনেকেই জানেন না এই জাগ্রত মন্দিরটির কথা

দক্ষিণেশ্বরের পাশে অবস্থিত
এই মন্দিরটি

অনেকেই জানেন না
এই জাগ্রত মন্দিরটির কথা

দক্ষিণেশ্বরের মতন এটিও
মা কালীর মন্দির

এখানেও রয়েছে
অলৌকিক শক্তি সম্পন্ন কালী ঠাকুর

যার কাছে মানত করলে,
ফল পাবেই পাবে

এই মন্দিরের বাইরে লাইন পড়ে,
নিঃসন্তান দম্পতি থেকে শুরু করে অসুস্থ রোগীদের

এখানে পুজো দিয়েই হাজার হাজার মানুষ
ফল পেয়েছেন

ভক্তরা এই মন্দিরের নাম শুনলে
কেঁদে ভাসেন

চলুন আজ এই মন্দিরটির কথা জেনে নেওয়া যাক

পশ্চিমবঙ্গের অত্যন্ত প্রসিদ্ধ কালী মন্দির হিসেবে দক্ষিণেশ্বর মন্দিরকে আমরা সকলেই চিনি। পশ্চিমবঙ্গের অধিকাংশ কালি সাধক থেকে শুরু করে কালি ভক্তরা দক্ষিণেশ্বরে গিয়ে থাকবেন। তবে দক্ষিণেশ্বরে গেলেও আমরা অনেকেই দক্ষিণেশ্বরের পাশে থাকা আরেকটি জাগ্রত কালীমন্দির সম্পর্কে জানি না। এই মন্দিরটিও স্বপাদেশে তৈরি হয়েছিল। মন্দিরটির নাম আদ্যাপীঠ মন্দির। যেখানে দেবী কালী আদ্যা শক্তি মহামায়া রূপে পূজিত হন। এই মন্দিরটি ভগবান শ্রী রামকৃষ্ণের স্বপ্নাদেশে তার শিষ্য শ্রী অন্নদা ঠাকুর তৈরি করেছিলেন। এই মন্দিরের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে অগণিত অলৌকিক এবং রহস্যময় কাহিনী। দক্ষিণেশ্বর মন্দির থেকে হেঁটে ১০ মিনিট এই মন্দিরের দূরত্ব।

১৯১৫ সালে শ্রী শ্রী রামকৃষ্ণের আদেশে এই মন্দিরটি নির্মাণ করেছিলেন শ্রী অন্নদা ঠাকুর। এই মন্দিরের যারা যারা ভক্ত, যারা যারা এই মন্দিরে পুজো দিয়েছেন অথবা মানত করেছেন তাদের প্রত্যেকের মুখেই শোনা যায় এই মন্দিরের মা কালীর অপার মহিমা। আদ্যা মন্দিরের ভক্তরা বলেন এই মন্দিরের পূজো দিলেই মানব করলেই তা একশ শতাংশ বলে। এই মন্দিরের মা কালীর মুখ খানা দেখলে আপনার হৃদয় এবং মনপ্রাণ জুড়ে যাবে। দেখলেই যেন মন হবে তিনি আপনার সমস্ত দুঃখ ও ব্যাকুলতা হারানো মন দিয়ে শুনছেন। এই মন্দিরের প্রাঙ্গণে বসে, মায়ের দিকে তাকিয়ে প্রার্থনা করলেই যেন মনে হবে মা আপনার সমস্ত দুঃখহরণ করে আপনাকে সুখ এবং শান্তি প্রদান করছেন। সকলের মুখে মুখে শোনা যায় এই মন্দিরের মা কালীর মধ্যে এমন এক মহিমা রয়েছে যা আপনাকে বারে বারে এই মন্দিরের দিকে টেনে নিয়ে যাবে। এ মন্দিরে গেলে আপনার মধ্যে এমন কিছু ঘটবে যা আপনার মধ্যে ভক্তি শ্রদ্ধা ধর্মের প্রতি আকুলতাকে যেন হাজার গুণ বাড়িয়ে দেবে।

এই মন্দিরের মা কালীকে পাওয়া গিয়েছিল ইডেন গার্ডেনের ঝিলের মধ্যে। ভগবান শ্রী রামকৃষ্ণ একদিন স্বপ্নে এসে শ্রী অন্নদা ঠাকুরকে বলেন ইডেন গার্ডেন এর ঝিলে গিয়ে মা কালীকে তুলে নিয়ে আসতে। অন্নদা ঠাকুর শ্রী রামকৃষ্ণের আদেশ মতন ইডেন গার্ডেনের ঝিলে গিয়ে খুঁজে পান আদ্যা মাকে। দিনটি ছিল রামনবমী তিথি। শ্রী অন্নদা ঠাকুর তার বিভিন্ন বইতে লিখে গিয়েছিলেন যেদিন তিনি মা আদ্যাকে তুলে নিয়ে আসেন, সেদিন রাতে আদ্যা মা, তাকে স্বপ্নে এসে বলেন

অন্নদা বিজয়া দশমীতে তুমি আমায় গঙ্গায় বিসর্জন দিয়ে দেবে

এই কথা শুনে ভেবাচ্যাকা খেয়ে যান শ্রী অন্নদা ঠাকুর। এরপর তিনি কথামতন মায়াময়ী আদ্যমাকে বিসর্জন দিয়ে আসেন। অবশ্য বিসর্জন দিয়ে এলো তিনি আদ্যা মায়ের একটি ছবি তুলে রেখেছিলেন সেই ছবি দেখে একটি প্রতিকৃত নির্মাণ করে, গড়ে তোলেন আদ্যা মন্দির। আজ আপনারা যে আদ্যা মন্দির দেখতে পাচ্ছেন সেই আড্ডা মন্দির তৈরি করেছিলেন শ্রী অন্নদা ঠাকুর। নিজের দায়িত্ব নিয়ে এবং শ্রীরামকৃষ্ণের পরামর্শ মতে তিনি এই মন্দির নির্মাণের কাজ সম্পন্ন করেন। তবে তিনি যতদিনে এই মন্দিরের কাজ সম্পন্ন করেন ততদিনে শ্রীরামকৃষ্ণ দেহত্যাগ করেছিলেন। এই মন্দিরের গর্ভ গৃহে চোখ রাখলেই প্রথমে দেখতে পাবেন আদ্যা মায়ের মূর্তি তার নিচেই রয়েছে পরমগুরু শ্রী রামকৃষ্ণের মূর্তি এবং তার দুপাশে রয়েছে শ্রী অন্নদা ঠাকুর এবং তার সহধর্মীনির মূর্তি।

এই মন্দিরে ভোগ প্রসাদের ব্যবস্থা রয়েছে। নির্ধারিত সময়ে মন্দিরে আরতি হয়। দেশ-বিদেশ থেকে ভক্ত সমাগমের ঢল নামে এই মন্দির চত্বরে।


Posted

in

by

Tags:

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *