ভারতের অন্যতম সেরা মুখ্যমন্ত্রী, যার বিরুদ্ধে একটাও আরোপ নেই, তবুও নবীন পট্টনায়ক কেন হারলেন বিজেপির কাছে?

ভারতের অন্যতম সেরা মুখ্যমন্ত্রী, যার বিরুদ্ধে একটাও আরোপ নেই, তবুও নবীন পট্টনায়ক কেন হারলেন বিজেপির কাছে?

ভারতের অন্যতম সেরা মুখ্যমন্ত্রী,
যার বিরুদ্ধে একটাও আরোপ নেই,

তবুও নবীন পট্টনায়ক কেন
হারলেন বিজেপির কাছে?

ওড়িশায় বিজেডির
পতনের কারণগুলো ঠিক কি কি?

২০২৪ সালের লোকসভার ভোটের পাশাপাশি দেশের বেশ কিছু রাজ্যে বিধানসভার নির্বাচনও অনুষ্ঠিত হয়েছে। যেমন তার মধ্যে রয়েছে ওড়িশা। সেখানে এবার বিধানসভার নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে। ফল প্রকাশ্যে আসতেই চক্ষু চড়ক গাছ সকলের! সেখানকার টানা পাঁচবারের মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়ককে একেবারে গো হারা হারাল বিজেপি। যা এক কথায় অবিশ্বাস্য! ওড়িশাই লোকসভার পাশাপাশি বিধানসভা দু ক্ষেত্রেই একেবারে শূন্যে নেমে এসেছে বিজু জনতা দল।

কিন্তু এক্ষেত্রে প্রশ্ন উঠছে, কিভাবে এই নবীন সাম্রাজ্যের পতন ঘটলো? এর নেপথ্যে ঠিক কোন কোন কারণগুলো উঠে আসছে? বিশ্লেষণে যা বেরিয়ে এল তা আজকের প্রতিবেদনে আপনাদের তুলে ধরবো-

১, সাংগঠনিক দুর্বলতা –

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন নবীন পট্টনায়ক দীর্ঘদিন ওড়িশার ধরে শাসন ক্ষমতায় ছিলেন। প্রথমদিকে নবীনের সাংগঠনিক এবং প্রশাসনিক দক্ষতা তুঙ্গে থাকলেও সময়ের সঙ্গে সঙ্গে নবীনের সাংগঠনিক দক্ষতা কমতে থাকে। দুর্বল হতে থাকে বিজু দলের আধিপত্য। ওড়িশার জায়গায় বিজেপি মাথা তুলে দাঁড়াতে থাকে। এই বিষয়টি ওড়িশায় নবীনের পরাজয়ের অন্যতম একটি কারণ। ফলস্বরূপ ওড়িশার,,, বিধানসভা নির্বাচনে ১৪৭ টি আসনের মধ্যে ৭৮ টি পেয়েছে বিজেপি এবং ৫১ টি আসন পেয়েছে বিজেডি।

২, আমলা নির্ভরতা –

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে ওড়িশার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়ক ভীষণ মাত্রায় আমলা নির্ভরশীল হয়ে পড়েছিলেন। দল এবং সরকার পরিচালনায় আমলাদের উপর তিনি প্রচন্ডভাবে ডিপেন্ড করতেন। নবীন পট্টনায়কের এই আমলা নির্ভরশীল হয়ে ওঠাটা ওড়িশাবাসীরা একেবারেই মেনে নিতে পারেনি।

৩, জনগণের কাছ থেকে দূরত্ব –

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, টানা ৫ বছর মুখ্যমন্ত্রীর পদ সামলে নবীন পট্টনায়ক কোথাও যেন হাঁপিয়ে গিয়েছে। প্রথম দিকে তিনি জনগণের কাছাকাছি থাকলেও ধীরে ধীরে জনগণের কাছ থেকে তিনি দূরত্ব বাড়াতে থাকেন। বেশিরভাগ সময় তাকে নিজের মতো থাকতে দেখা গিয়েছে। রাজনৈতিক মহলে অনেকেই এমনটা মনে করেন যে ,,, বয়সের কারণে হয়তো কোথাও গিয়ে আগের মতন জনসংযোগ কাজকর্ম তিনি করে উঠতে পারছিলেন না। আর এই কারনে জনগণের কাছ থেকে নবীন বাবুর দূরত্ব বাড়তে থাকে। এর ফলে কোথাও গিয়ে তার উপর ভরসা হারিয়ে ওড়িশাবাসী।

৪, বিজেডির অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ

রাজনৈতিক মহলের একাংশ মনে করছেন প্রতিটি দলের ভবিষ্যৎ উত্তরসুরি কে হবেন সেই নিয়ে একটি স্বচ্ছ ধারণা জনমানসে তৈরি করা উচিত। কিন্তু এই দিক থেকে অনেকটাই পিছিয়ে গিয়েছিল নবীনের বিজু দল। যেহেতু নবীন পট্টনায়কের বয়স হয়েছিল, এবং তিনি বার্ধক্য জনিত বেশ কিছু অসুখে আক্রান্ত। ফলস্বরূপ তিনি যে খুব বেশিদিন পদে থাকবেন না সেটা নিশ্চিত। এই পরিপ্রেক্ষিতে দাঁড়িয়ে নবীন বাবুর পরিবর্তে বিজু দলের পরবর্তী উত্তরসূরী কে? এই ধারণা স্পষ্ট ছিল না ওরিসাবাসীর কাছে। যে কারণে ওড়িশার বাসিন্দারা অনিশ্চয়তায় ভুগছিলেন তাদের রাজ্য সরকারের বিষয়ে।

আর এই সমস্ত কারণেই মূলত ২০২৪ এর বিধানসভা ভোটে বিজু দলের ভরাডুবি ঘটেছে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।


Posted

in

by

Tags:

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *