কী এই OBC সার্টিফিকেট? কাদের জন্য এই সার্টিফিকেট? সবার জন্য নয় এটি

কী এই OBC সার্টিফিকেট? কাদের জন্য এই সার্টিফিকেট? সবার জন্য নয় এটি

কী এই
OBC সার্টিফিকেট?

কাদের জন্য
এই সার্টিফিকেট?

সবার জন্য
নয় এটি!

কি কি সুবিধা থাকে
এই সার্টিফিকেটে?

জানুন বিস্তারিত

এসএসসি দুর্নীতির পর এবার ওবিসি দুর্নীতি নিয়ে উত্তাল গোটা রাজ্য! সম্প্রতি ২০১০ সালের পর জারি হওয়া সমস্ত ওবিসি সার্টিফিকেট বাতিলের নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। যা নিয়ে নতুন করে উত্তপ্ত রাজ্য রাজনীতি। অভিযোগ ২০১০ সালের পর অর্থের বিনিময়ে এই ওবিসি সার্টিফিকেট বিক্রি করা হয়েছে অযোগ্যদের কাছে। ব্যাস এরপর নতুন করে তোলপাড় কোর্ট চত্বর।

চলুন আজকের প্রতিবেদনে আপনাদের জানাই এই ওবিসি সার্টিফিকেট আসলে কি? কাদেরকে দেওয়া হয় আর কাদেরকে দেওয়া হয় না! সমস্ত তথ্য খুঁটিনাটি জানাবো আজকের প্রতিবেদনে –

ওবিসি সার্টিফিকেট এটি হলো এমন একটি সার্টিফিকেট যা সমাজের অনগ্রসর সম্প্রদায়ের দেওয়া হয়। এখন আপনাদের জানতে ইচ্ছে করবে এই অনগ্রসর সম্প্রদায় কি? সেটাও আপনাদের খোলসা করে বলছি। অনগ্রসর সম্প্রদায় বা অনগ্রসর শ্রেণী বলতে বোঝায় সমাজের সেই মানুষগুলোকে __ যারা শিক্ষাগত এবং সামাজিক দিক থেকে পিছিয়ে রয়েছে, যারা সমাজের মূলস্রোত থেকে বঞ্চিত, যারা আজও সমাজের প্রান্তিক অঞ্চলে আবদ্ধ রয়েছে, যাদেরকে সমাজের তথাকথিত এলিট সম্প্রদায়ের মানুষেরা ব্রাত্য মনে করে। এই মানুষগুলোকেই বলা হয় অনগ্রসর সম্প্রদায়ের অন্তর্ভুক্ত মানুষ। এই মানুষগুলোর রুটি কাপড়া মাকান সুনিশ্চিত করতে ওবিসি সার্টিফিকেটের উৎপত্তি। ১৯৮০ সালে মন্ডল কমিশনের রিপোর্ট অনুযায়ী সেই সময় দেশের বাহান্ন শতাংশ মানুষ এই অনগ্রসর শ্রেণীর অন্তর্ভুক্ত ছিল। এক্ষেত্রে আপনাদের একটি কথা জানিয়ে রাখি যে দেশে যত বেশি অনগ্রসর শ্রেণীর অন্তর্ভুক্ত মানুষ থাকবে সেটা সেই দেশের জন্য লজ্জা। কারণ অংগ্রসর শ্রেণীর মানুষের জন্ম তখন হয় যখন দেশের শাসক দেশের মানুষকে মৌলিক অধিকার দিতে ব্যর্থ হয়। দেশের মানুষকে সমানভাবে প্রতিষ্ঠিত করতে ব্যর্থ হয়। তবে সময়ের সাথে সাথে ভারতের অনগ্রসর সম্প্রদায়ের মানুষের সংখ্যা অনেকটাই কমেছে। সময় যত এগিয়েছে তত ভারতের অনগ্রসর শ্রেণীর মানুষেরা উন্নতির দিকে ধাবিত হয়েছে। বিষয়টি ভারতের জন্য অত্যন্ত ইতিবাচক।

ভারতের পশ্চিমবঙ্গে অনুগ্রসর শ্রেণীর কতগুলো ভাগ রয়েছে?

শুরুতে জানাবো পশ্চিমবঙ্গের অনগ্রসর শ্রেণীর তালিকায় ১৭৯ টি সম্প্রদায় রয়েছে। এদেরকে দুই ভাগে বিভক্ত করা হয়েছে। প্রথমভাগে পড়ছে ৮১ টি জাতি। তাদের মধ্যে ৭৩ টি জাতি মুসলিম। তালিকায় যারা যারা রয়েছেন যথাক্রমে

মুসলিম দফাদার
গায়েন মুসলিম
মুসলিম জামাদার
মুসলিম কালান্দার
কসাই
মাঝি
খানসামার, মতন আরো অনেকে আছে।

দ্বিতীয় ভাগে রয়েছে ৯৮ টি জাতি যাদের মধ্যে ৪৫টি রয়েছে মুসলিম। দেখুন কারা কারা পড়ছে এই তালিকায়

বৈশ্য কাপালি
বংশী
বর্মন
বারুজীবী
চিত্রকর
দেওয়ান
কর্মকার
গোয়ালা, সহ আরো অনেকে আছে।

এখন দেখুন এই ওবিসি সার্টিফিকেটে ঠিক কি কি পরিষেবা পাওয়া যায় –

আপনাদের শুরুতেই বলেছি সমাজের পিছিয়ে পড়া অনগ্রসর শ্রেণীর মানুষদের সংরক্ষণ করার জন্যই এই ওবিসি সার্টিফিকেট দেওয়া হয়ে থাকে। অনগ্রসর মানুষগুলো যাতে সমাজ থেকে সুবিধাবঞ্চিত না হয়, তারাও যাতে আর পাঁচটা সাধারণ মানুষের মতন মৌলিক অধিকার ভোগ করতে পারে, তারাও যাতে সমাজে মাথা তুলে বাঁচতে পারে তার জন্যই এই ওবিসি সার্টিফিকেট দেওয়া হয়।

এই ওবিসি সার্টিফিকেট এর মধ্য দিয়ে পশ্চিমবঙ্গ সরকার অনগ্রসর শ্রেণীর মানুষদের জন্য চাকরিতে ১৭ শতাংশ আসন সংরক্ষণ করেছেন। এই ১৭ শতাংশের মধ্যে যারা প্রথম ভাগের অনগ্রসর শ্রেণীর মানুষ তাদের জন্য দশ শতাংশ সংরক্ষণের সুবিধা রয়েছে,,, আর অন্যদিকে যারা দ্বিতীয় ভাগে পড়ছেন তাদের জন্য ৭ শতাংশ সংরক্ষণের সুবিধা থাকছে।

অনগ্রসর শ্রেণীর বাইরের অর্থাৎ সাধারণ কোন মানুষকে এই সার্টিফিকেট এবং সুবিধা প্রদান করা হয় না। তবে সম্প্রতি অর্থের বিনিময়ে অনগ্রসর শ্রেণীর বাইরের মানুষের কাছেও এই সার্টিফিকেট বিক্রি করা হয়েছে যা নিয়ে আপাতত তোলপাড় রাজ্য রাজনীতি ।


Posted

in

by

Tags:

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *