বাংলাদেশে ছড়িয়েছে নতুন আতঙ্ক শয়তানের নিঃশ্বাস!
যাকে পারছে তাকে ধরছে!
বাংলাদেশে ছড়িয়েছে নতুন আতঙ্ক
শয়তানের নিঃশ্বাস!
যাকে পারছে তাকে
ধরছে!
চোখের নিমেষে
কাবু করছে!
এই নিঃশ্বাস গায়ে পড়তেই
নিজে থেকে খুলে দিয়ে দিচ্ছে
গয়না গাটি, টাকা পয়সা!
কি এই শয়তানের নিঃশ্বাস?
বাংলাদেশের তাহমিনা নামের এক মহিলা কিছুদিন আগেই এক অদ্ভুত ঘটনার সম্মুখীন হন। একদিন তিনি বাজার থেকে ফিরছিলেন। আর সেই সময় তার পথ আগলে দাঁড়ায় এক আজব মহিলা। প্রায়ই তার গা ঘেঁষে দাঁড়ায় ওই অজ্ঞাত পরিচয়দারী মহিলা। এরপর ওই মহিলা তাহমিনা বেগমের কাছ থেকে একটি ঠিকানা জানতে চান। ঠিকানা জানার সাথে সাথে আরেক যুবক এসে হাজির হয় তাহমিনা বেগমের সামনে। ওই অজ্ঞাত পরিচয়ধারী মহিলা এবং ওই যুবক তাহমিনা বেগমের নাকের অনেকটা কাছে চলে যান। আর এর পরেই তাহমিনা বেগম হঠাৎ করেই দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থাতেই বেহুশ মতন হয়ে যান। তিনি নিজের ওপর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেন। তিনি ওই অজ্ঞাত পরিচয়ধারী মহিলা এবং যুবকের ইশারায় চলতে থাকেন। ওই অজ্ঞাত মহিলা এবং যুবক তাহমিনা বেগমকে বলেন তার কানে থাকা দুলু, গলায় থাকা চেন, আর ব্যাগে থাকা নগদ টাকা তাদের হাতে তুলে দিতে। তাহমিনা বেগম তাদের কথামতো ঠিক ঠিক ভাবে তার সমস্ত কিছু তুলে দেন তাদের হাতে। সমস্ত কিছু খুলে দেওয়ার কিছুক্ষণ পর হুশ ফিরে তাহমিনা বেগম নামক ওই মহিলার। কিন্তু হুশ ফিরতে ফিরতে যা হওয়ার হয়ে গেছে। ততক্ষণে ওই অজ্ঞাত পরিচয়ধারী মহিলা এবং ওই যুবক তাহমিনা বেগমের কাছ থেকে সমস্ত কিছু হাতিয়ে চম্পট দিয়েছে। এই যে তাহমিনা বেগমের সঙ্গে যে ঘটনাটি ঘটেছে এটাই হলো শয়তানের নিঃশ্বাস।
তাহমিনার সাথে ঘটে যাওয়া এই অস্বাভাবিক এবং আজব ঘটনাটি দীর্ঘদিন ধরেই বাংলাদেশে ঘটে চলেছে। সাম্প্রতিক সময়ে অনেকের সঙ্গেই এই ঘটনা ঘটেছে। এই ঘটনায় রীতিমতো আতঙ্কিত শহরের মানুষ। এই ঘটনাটি বাইরের বিশ্বেও শয়তানের নিঃশ্বাস নামে পরিচিত। ইংরেজিতে একে ডেভিলস ব্রিথ বলা হয়। এটি কিছুই না, এটি হল প্রতারণা এবং চুরির একটি অভিনব কৌশল। এই কৌশলের সাহায্যে অপরাধকারী যে কাউকে তার বশে আনতে পারে। শুধু বসে নয় নিজের আঙ্গুলের ইশারায় নাড়াতে পারে। এই অভিনব পন্থার সাহায্যে অপরাধী যে কোনো মানুষকে বশীকরণ করতে পারে।
অপরাধ বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, এই শয়তানের নিঃশ্বাস নামক স্ক্যমটিতে ব্যবহার করা হয় পৃথিবীর সবচেয়ে ভয়ংকর নেশা স্কোপোলামিন। যাকে শয়তানের নিঃশ্বাস বলে চেনে গোটা বিশ্ব। এটি এক প্রকার হেলুসিনেটিক ড্রাগ। রাসায়নিকভাবে এটি স্কোপোলামিন নামে পরিচিত। বাইরের বিভিন্ন দেশে এই রাসায়নিকের ব্যবহার পরিলক্ষিত হয়। তবে বর্তমানে প্রতারণার কাজ সফল করার জন্য বাংলাদেশ এবং ভারতেও এই রাসায়নিকের ব্যবহার করা হচ্ছে। শুধু বাংলাদেশ নয় এই রাসায়নিকের ভয়ংকর প্রভাব থেকে বাদ পড়ছে না ভারতও।
শয়তানের নিঃশ্বাস নামক এই বিষাক্ত উপাদানটির কাজই হল কাউকে অন্যের আদেশ পালনে বাধ্য করা। এই রাসায়নিকের আক্রান্ত ব্যক্তি সাময়িকের জন্য কোন কিছু মনে রাখতে পারেন না। নিজের উপর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেন। এই রাসায়নিক যখন কারো শরীরে প্রবেশ করে তখন সেই ব্যক্তি নিজে থেকে কিছু করতে পারেন না। তখন তিনি হয়ে যান অনেকটা হাতের পুতুলের মতন। অর্থাৎ আপনাকে যা বলবে আপনি তাই করতে বাধ্য হবেন। এই রাসায়নিকটি অনেক ভাবে ব্যবহার করা হয় কখনো হ্যান্ড শেকের মাধ্যমে কখনো বা স্প্রের মাধ্যমে।
এই রাসায়নিকটি গোটা বিশ্বে নিষিদ্ধ। কিন্তু এখনো অপরাধীরা, অপরাধকার্য সিদ্ধি করার জন্য এই রাসায়নিকটির প্রয়োগ করে থাকে। তবে আজকের প্রতিবেদনে আপনাদের এই ব্যাপারে সতর্ক করা হলো। রাস্তাঘাটে চলতি ফিরতি অবস্থায় অপরিচিত লোকদের থেকে দূরত্ব বজায় রেখে চলুন। নিজের সাবধান থাকুন এবং অন্যকে সাবধানে রাখুন।
Leave a Reply