রামকৃষ্ণ মিশনে কি মুসলিম পড়ুয়ারা পড়তে পারেন? রামকৃষ্ণ মিশন কি মুসলিম পড়ুয়াদের গ্রহণ করে? জানুন

রামকৃষ্ণ মিশনে কি মুসলিম পড়ুয়ারা পড়তে পারেন? রামকৃষ্ণ মিশন কি মুসলিম পড়ুয়াদের গ্রহণ করে? জানুন

রামকৃষ্ণ মিশনে কি
মুসলিম পড়ুয়ারা পড়তে পারেন?

রামকৃষ্ণ মিশন কি
মুসলিম পড়ুয়াদের গ্রহণ করে?

এখানে কি ধর্মের ভিত্তিতে
পড়াশুনো চলে?

জানুন রামকৃষ্ণ মিশনের
সত্যতা সম্পর্কে

রামকৃষ্ণ মিশন এই প্রতিষ্ঠানের নাম শোনেননি এমন মানুষ কম আছেন। রামকৃষ্ণ মিশন শুধুমাত্র একটি প্রতিষ্ঠান বললে ভুল হবে এটি মূলত এমন একটি ইনস্টিটিউশন যার আন্ডারে আসলে প্রকৃত মানুষ তৈরির কাজ করা হয়। একদমই তাই। প্রত্যেক অভিভাবকের স্বপ্ন থাকে রামকৃষ্ণ মিশনে ছেলেমেয়েদের পড়াবেন। অভিভাবক এবং পড়ুয়া সকলের কাছেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রাম কৃষ্ণ মিশন সবার আগে প্রাধান্য পায়। তবে এই রামকৃষ্ণ মিশন সম্পর্কে বহু সংখ্যালঘু অভিভাবক ও পড়ুয়াদের মধ্যে বেশ কিছু সংশয় থাকে। অনেকেই প্রশ্ন করেন রামকৃষ্ণ মিশনে কি হিন্দু ধর্মাবলম্বী ছাড়া অন্যান্য ধর্মের পড়ুয়াদের পড়াশোনা করানো হয়? অর্থাৎ হিন্দু ছাড়া মুসলিম বৌদ্ধ খ্রিস্টান এই সকল ধর্মের পড়ুয়াদের পড়ানোর ব্যবস্থা কি রাম কৃষ্ণ মিশনে আছে? আজকের প্রতিবেদনে আপনাদের এই সমস্ত প্রশ্নের উত্তর খোলসা করে জানাব।

শুরুতেই আপনাদের বলি প্রতিবছর রামকৃষ্ণ মিশনের পড়ুয়ারা যথেষ্ট নদীর বিহীন রেজাল্ট করে। ফলস্বরূপ প্রতিবারই বড় বড় পরীক্ষাগুলোর রেজাল্ট বেরোলেই রামকৃষ্ণ মিশনের নাম আলোচনায় উঠে আসে। যে কারণে এই রামকৃষ্ণ মিশন সম্পর্কে অভিভাবক এবং পড়ুয়াদের মধ্যে কৌতুহল এবং বিভিন্ন বিষয়ে জানার আগ্রহ থাকে। তার মধ্যে উল্লিখিত বিষয়গুলো অনেক বেশি পরিমাণে আসে।

রামকৃষ্ণ মিশন এমন একটি ইনস্টিটিউশন এখানে ধর্মভিত্তিক কোন প্রকার পড়াশুনো কিংবা কাজকর্ম হয় না। অর্থাৎ সহজ ভাবে বললে এখানে ধর্ম দেখে কোন কিছু বিচার হয় না। অনেকেই হয়তো রামকৃষ্ণ মিশন এই নামটি শুনে মনে করেন এখানে হয়তো হিন্দু সম্প্রদায়ের পড়ুয়ারাই পড়াশোনা করেন। কিন্তু এই ধারণা সম্পূর্ণ ভুল। রামকৃষ্ণ মিশন এই নামটি হিন্দু সম্প্রদায়ের মনুষ্য স্বরূপ দেবতা শ্রী শ্রী পরম রামকৃষ্ণ পরমহংসদেবের নামের সাথে মিল রেখে রাখা হয়েছে। মূলত রামকৃষ্ণ ঠাকুরের যে মতাদর্শ, যে ভাবাদর্শ, যে মানবিক দর্শন সেই সমস্ত কিছুকে লক্ষ্য রেখে এই রামকৃষ্ণ মিশনের প্রতিষ্ঠা। রামকৃষ্ণ মিশন ভীষণ মাত্রায় বিশ্বাস করে যে মনুষ্যতাই হলো একমাত্র ধর্ম। এই ইনস্টিটিউশনে ভর্তি নেওয়ার সময় কোনও পড়ুয়ার ধর্ম দেখা হয় না। এই ইনস্টিটিউশনে পড়ুয়াদের ভর্তি নেওয়া হয় মানুষ হিসেবে গড়ে তোলার জন্য। আপনাদের জানিয়ে রাখি প্রতিবছর রাজ্যের বোর্ড পরীক্ষাগুলো থেকে যে সমস্ত মুসলিম পড়ুয়ারা পড়াশোনায় ছাপ রাখেন তাদের মধ্যে অধিকাংশই রামকৃষ্ণ মিশনের ছাত্র-ছাত্রী হয়ে থাকেন। প্রত্যেক বছরের বোর্ড পরীক্ষাগুলোর পরিসংখ্যান লক্ষ্য করলে কিন্তু আপনারা এই বিষয়টি খুঁজে পাবেন। গত বছর অর্থাৎ ২০২৩ সালেও রাজ্যে যে কজন মুসলিম পড়ুয়া নজিরবিহীন রেজাল্ট করেছে তাদের মধ্যে বেশিরভাগই রামকৃষ্ণ মিশনের পড়ুয়া ছিল।। তার মধ্যে সবথেকে বেশি আলোচনা এসেছিলেন মালদার রামকৃষ্ণ মিশন বিবেকানন্দ বিদ্যামন্দিরের পড়ুয়া রিফাত হাসান সরকার। যার প্রাপ্ত নম্বর ছিল 691। অন্যদিকে মালদা রামকৃষ্ণ মিশন বিবেকানন্দ বিদ্যামন্দির স্কুলেরই আরো এক পরুয়া ছাপ রেখেছিল বোর্ড পরীক্ষায়,,,, তার নাম মুহাম্মদ সারওয়ার ইমতিয়াজ। যার প্রাপ্ত নম্বর ছিল 690। কি বুঝতে পারলেন তো? আপনাদের উত্তরটা পেয়েছেন তো? রামকৃষ্ণ মিশনে হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান, জৈন বিশ্বের কোন ধর্মের প্রতি বিভেদ করা হয় না।

রামকৃষ্ণ মিশনের পড়ুয়ারা নিজেরাই বহুবার স্বীকারোক্তি দিয়েছেন,,, এই বলে যে __ মিশনে সমস্ত ধর্মের পড়ুয়াদের মধ্যে সুন্দর সাবলীল সম্পর্ক ও ভাতৃত্ববোধ স্থাপিত হয়। এই মিশনের একটাই সারকথা _

সকল ধর্মের উপরে অবস্থান করে মানব ধর্ম।

আর এই মানব ধর্মকে ব্রতি করেই আজও সুনামের সঙ্গে এগিয়ে চলেছে রামকৃষ্ণ মিশন। তবে আজ অনেকেই রামকৃষ্ণ মিশনের গায়ে রাজনীতির রং লাগানোর চেষ্টা করছেন। সম্প্রতি শাসক-শিবিরের পক্ষ থেকে রামকৃষ্ণ মিশনের গায়ে নোংরা কাঁদা ছেটানো হয়েছে। যা নিয়ে চলছে বিস্তরত তরজা। বাংলায় রাজনৈতিক সুবিধা আদায়ের জন্য রামকৃষ্ণ মিশন এবং সেখানের দায়িত্বরত সম্মানীয় মহারাজদের টার্গেট করার দরকার পড়বে, এমন দৃশ্য বাঙালি বোধ হয় কখনো কল্পনাও করেনি। কিন্তু বর্তমান শাসক শিবিরের কারণে বাঙালিকে আজ এই দৃশ্যও দেখতে হচ্ছে ………


Posted

in

by

Tags:

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *