কে এই কার্তিক মহারাজ? চেনেন এই মানুষটিকে? যাকে নিয়ে গালমন্দ করছেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী
কে এই কার্তিক মহারাজ?
চেনেন এই মানুষটিকে?
যাকে নিয়ে গালমন্দ করছেন
স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী!
যার চরিত্র হনন করছে
পশ্চিমবঙ্গের শাসক শিবির!
ইনি কিন্তু কোনও
সাধারণ মানুষ নন!
দেখুন ইনি আসলে কে
এই মুহূর্তে রাজ্য রাজনীতি তোলপাড়,,,, একজন ব্যক্তিকে কেন্দ্র করে।।আর তিনি হলেন কার্তিক মহারাজ। এই কার্তিক মহারাজ নামক ব্যক্তিটির সঙ্গেই ঝামেলায় জড়িয়ে পড়েছেন রাজ্যের মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিষয়টা এমন হয়ে দাঁড়িয়েছে যে কার্তিক মহারাজ বনাম মুখ্যমন্ত্রী। দিন কয়েক আগে হুগলির এক নির্বাচনী জনসভা থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই কার্তিক মহারাজ এর উপর রাজনৈতিক যোগ সূত্রের অভিযোগ তোলেন। শুধু তাই নয় মমতা ব্যানার্জি আরো বলেন কার্তিক মহারাজের কারণেই নাকি বুথে তৃণমূল এজেন্স বসাতে পারেননি তিনি। ব্যাস এরপরেই শুরু হয়ে যাই দু পক্ষের দাঙ্গা। আপাতত সবার মুখে মুখেই ঘুরে বেড়াচ্ছে কার্তিক মহারাজের নাম। কিন্তু আপনারা কি জানেন এই কার্তিক মহারাজ কে ? কি তার পরিচয়? বঙ্গ রাজনীতিতে হঠাৎ তার নাম কিভাবে উঠে এলো?
কার্তিক মহারাজ সম্পর্কে বলতে গেলে অনেক কথাই বলতে হয়। কার্তিক মহারাজের অফিশিয়াল পরিচয় হলো তিনি বেলডাঙ্গা ভারত সেবাশ্রম সংঘের প্রধান। এই মানুষটি অনেক অল্প বয়সে সন্ন্যাস জীবন গ্রহণ করেন। পরিবার সংসার সমস্ত কিছু ছেড়েছুড়ে একেবারে কিশোর বয়সেই তিনি ভারত সেবাশ্রম সংঘে যোগদান করেন। এরপরেই শুরু করেন ব্রহ্মচার্য পালন। সন্ন্যাস জীবনের প্রথম দিকে তিনি পুরুলিয়ার একটি আশ্রমে অংশ নেন। এরপর ওরঙ্গাবাদের একটি আশ্রমে যান। তখনও তিনি পুরোপুরি ব্রহ্মচার্য পালনে ব্রতী হননি। এরপর একসময় তিনি ভারত সেবাশ্রম সংঘের সংস্পর্শে আসেন। আর ভারত সেবাশ্রম সংঘের সংস্পর্শে আসার পর থেকেই বদলে যেতে থাকে তার মানব চেতনা। ধীরে ধীরে পাল্টাতে থাকে চিন্তাভাবনা। ধীরে ধীরে ধীরে উপলব্ধি করতে থাকেন যে ভারত সেবাশ্রম সংঘের শিক্ষা দীক্ষা কালচার তাকে অনুপ্রাণিত করছে। এরপর আর বেশি দেরি না করেই তিনি ঔরাঙ্গাবাদে স্বামী প্রজ্ঞানন্দ মহারাজের কাছে দীক্ষা নেন। এরপর এক নতুন কার্তিক মহারাজের জন্ম হয়। সমস্ত পুরনো পোশাক আশাক ছেড়ে তিনি নতুন করে নিজেকে আবিষ্কার করেন। হয়ে ওঠেন সম্পূর্ণ এক ব্রহ্মচারী।
কার্তিক মহারাজ যখন ভারত সেবাশ্রম সংঘের সঙ্গে যুক্ত হন তখন ভারত সেবাশ্রম সংঘের পরিস্থিতি ছিল অত্যন্ত কঠিন। সংঘের সদস্যরা একবেলা খাবার জোটাতে হিমশিম খেয়ে যেত। হিসেব করে খাওয়া দাওয়া চলত। তাই দিয়েই ভারত সেবাশ্রম সংঘের সদস্যদের পেট চালাতে হতো। এই ভারত সেবা সংঘের গোটা চিত্রটাই ধীরে ধীরে বদলে যেতে থাকে কার্তিক মহারাজের হাত ধরে। তিনি নিজ দায়িত্বে ধীরে ধীরে এই ভারত সেবা সংঘের রূপরেখা পাল্টে দিতে থাকেন। অত্যন্ত মানবিক এবং দয়ালু কার্তিক মহারাজ ভারত সেবা সংঘের হাল ধরার পর থেকেই একের পর এক উন্নতি ঘটতে থাকে। তার তত্ত্বাবধানে বেলডাঙ্গায় আদিবাসী মেয়েদের জন্য তৈরি হয়েছে হাইস্কুল প্রাথমিক বিদ্যালয়। শুধুই কি তাই কার্তিক মহারাজ নিজে দায়িত্ব নিয়ে কেন্দ্র সরকারের কাছ থেকে সাহায্য আদাই শুরু করেন। বর্তমানে বেলডাঙ্গায় বারোটির মতন স্কুল রয়েছে। ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যাও দিনকে দিন বেড়েই চলেছে। এখন আর বেলডাঙ্গায় কেউ কষ্ট পেয়ে থাকে না। সকলেই আরামে আইসে দিন কাটাচ্ছেন। ভারত সেবা সংঘের শিষ্যরা কার্তিক মহারাজের পরম ভক্ত। মহারাজের শিষ্যদের কাছ থেকে শোনা যায় তিনি নাকি ভারত সেবা সংঘে এসেছিলেন একেবারে খালি হাতে। একটি ইটও নিয়ে আসেন নি। সেই কার্তিক মহারাজ আজ ভারত সেবা সংঘের বট বৃক্ষ। যার ছায়া তলে আশ্রিত অসংখ্য মানুষ।
Leave a Reply