কলকাতার একমাত্র মা কালীর মন্দির,

Title: কলকাতার একমাত্র মা কালীর মন্দির, যেখানে মায়ের আরাধনা হয় চাউমিন ও চপস্যুইয়ে

Focus:
কলকাতার একমাত্র
মা কালী মন্দির!

যেখানে ভোগ হিসেবে
খিচুড়ি কিংবা অন্ন দেওয়া হয় না!

বরং দেওয়া হয়
চাউমিন, চপস্যুই!

স্বয়ং দেবী নাকি খেতে পছন্দ
করেন এই খাবারগুলি!

প্রসাদে এগুলি দেখতে না পেলে
ভয়ঙ্কর ভাবে রেগে যান তিনি!

শুধু তাই নয় এই মন্দিরের পূজো
অর্চনাও করা হয় বিশেষ ভাবে!

এই মন্দিরে আর যা যা হয়
শুনলে থ হয়ে যাবেন

 

Body:

কতই না বৈচিত্র্যময় এই দেশ! পাহাড়-পর্বত, ঝর্না,নদী রাজ-রাজাদের কাহিনী থেকে শুরু করে কিনা নেই এই দেশে! তবে সবকিছুর পিছনেই রয়েছে কাহিনী। শুধু কাহিনী বলা ভুল অলৌকিক কাহিনী! তবে অলৌকিক কাহিনীর কথা উঠলে সবার আগে উঠে আসে দেব-দেবীদের কথা। হিন্দুরা ৩৩ কোটির দেব-দেবীর আরাধনা করে থাকেন। তাই ভারতবর্ষে মন্দিরের অভাব নেই। এক একটা মন্দিরের পিছনে রয়েছে এক এক রকমের অলৌকিক কাহিনী। তেমনি কলকাতাতেই রয়েছে এমনই এক কালী মন্দির,,,,,,,, যেখানে মাকে ভোগ হিসেবে নিবেদন করা হয় চাউমিন, চপস্যুই। কি কথাটি শুনে চমকে গেলেন তো। মনে হচ্ছে এ আবার কেমন মন্দির! যেখানে সব জায়গায় ঠাকুরের ভোগ হিসেবে নিবেদন করা হয় খিচুড়ি, লুচি, পায়েস। সেখানে কিনা চাইনিজ খাবার? এগুলো আবার ঠাকুরকে দেওয়া হয় নাকি! তবে সেগুলো আমাদের নিছক ধ্যান ধারণা মাত্র। ভক্তি ভরে যাই দেওয়া হোক না কেনো মা সবই গ্রহণ করেন। শোনা যায় মাও নিত্যপ্রসাদ হিসেবে নাকি এই ভোগই পছন্দ করেন। শুধু তাই নয়, এখানকার মা কালী এতই জাগ্রত যে, কখনোই কোন সন্তানকে তিনি খালি হাতে ফেরার না। শুধু ভোগই নয় মায়ের পুজোতেও বিশেষ নিয়ম পালন করা হয়ে থাকে। তাহলে চলুন দেরি না করে জেনে নিই এই মন্দিরের রহস্য।

একদম কলকাতার মধ্যেই অবস্থিত এই কালী মন্দির। কলকাতার ট্যাংরা এলাকায় চাইনা টাউনে অবস্থিত এই মন্দির। এই মন্দিরের নাম চীনা কালী মন্দির। প্রতিদিন সকাল বিকেল এই মন্দিরে জমায়েত হয় হাজার হাজার ভক্ত। চাইনিজ খাবারের নাম শুনলেই সবাই বেছে নেয় এই চাইনা টাউনকে। শুধু খাবারই নয় চিনা মন্দিরও এখানে খুব বিখ্যাত। তবে এই মন্দিরে পূজো করা হয় অর্ধেক বাঙালি এবং অর্ধেক চিনা রীতির নিয়ম অনুসারে। অনেক বছর হয়ে গিয়েছে এই মন্দির এখানে প্রতিষ্ঠিত। শোনা যায়, এই মন্দিরে কালী ঠাকুরের মূর্তি স্থাপন করেছিলেন এক চিনা বৌদ্ধ। ভারতে যখন ইংরেজদের শাসনকাল চলছিল তখনই চিনাদের কিছু একাংশ এখানে এসে বাস করতে শুরু করেন। তারা শুধু বাস করতেই শুরু করেন না। এখানকার রীতিনীতিও, আদব-কায়দা সব কিছুই আপন করে নেন । সেই সাথে মা কালীকেও নিজেদের আরাধ্য দেবী হিসেবে পূজো করতে শুরু করেন। জানা যায়, এখানে বাঙালি থেকে শুরু করে চীনারা সকলেই মা-কালিকে ভোগ হিসেবে নিবেদন করেন নুডুলস, চাউমিন কিংবা চপস্যুই। দেবীও নাকি এই ভোগেই তুষ্ট। তবে এই ভোগ দেওয়ার পিছনে বিশেষ একটি কাহিনী। সে বহু বছর আগের কথা। শোনা যায় সেই সময় মন্দিরের এত আড়ম্বর ছিল না। একটি গাছের তলায় মূর্তি স্থাপন করে তখন পূজো করা হতো। একদিন এক চিনাবালক অসুস্থ হয়ে পড়েন। ডাক্তার বদ্যি দেখিয়েও তার অসুখ সেরে উঠছিল না। ছেলেটির বাবা-মা মায়ের কাছে গিয়ে মানত করেন। এমনকি গাছের তলায় মায়ের মূর্তি সামনে ছেলেকে শুইয়ে রেখে,,,,,,,,,,দিনরাত মায়ের নামে জপ করতে থাকেন। কালী ঠাকুরের কৃপায় ছেলেটি নাকি ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে ওঠেন। সেই থেকেই সকলের মা কালীর প্রতি বিশ্বাস তৈরি হয়। এরপর সকলে মিলে এখানে তৈরি করেন চিনা কালী মন্দির। দীপাবলি আসলে মন্দিরের পুরো চেহারাই বদলে যায়। এখানকার স্থানীয় বাসিন্দারা গোটা মন্দির আলোয় আলোকিত করে তোলেন। হাজার হাজার ভক্তরা মায়ের দর্শন পাওয়ার জন্য এখানে ভিড় জমায়। হিন্দু বৌদ্ধ, চিনা, খ্রিস্টান প্রায় সব ধর্মের লোকেরাই এখানে পুজো দিতে আসেন। ফল মিষ্টির পাশাপাশি দেওয়া হয় স্টিক রাইস, চাউমিন, নুডুলস সহ আরো বিভিন্ন ধরনের খাবার। তবে এখানকার পুরোহিত একেবারে খাঁটি বাঙালি। মায়ের পূজো তিনি এত নিষ্ঠাভরে করেন যে দেখলেই চোখ জুড়িয়ে যায়। এই মন্দিরে আপনি একবার আসলে বারবার আসতে চাইবেন। মন্দিরে ভেতরে থাকা মায়ের ভুবন ভুলানো হাসি দেখলে,,,,,,, মনে জাগবে অপার শান্তি। এই মন্দিরই যেন সকল ধর্মকে এক করে দিয়েছে।


Posted

in

by

Tags:

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *