জানেন, পুরীর মন্দিরে পা রাখলেই উবে যায় সমুদ্রের ভয়ংকর গর্জন!

Title: জানেন, পুরীর মন্দিরে পা রাখলেই উবে যায় সমুদ্রের ভয়ংকর গর্জন! হঠাৎ এমন হওয়ার কারণ কি?

Focus:

জানেন?

পুরীর মন্দিরে পা রাখলেই উবে
যায় সমুদ্রের ভয়ংকর গর্জন!

কেনো মন্দিরের ভিতরে সমুদ্রের
ভয়ঙ্কর গর্জন ভেসে আসে না?

সমুদ্র থেকে মন্দির এত কাছে থাকা সত্ত্বেও
এমন অলৌকিক কান্ড কিভাবে ঘটতে পারে!

একসময় যেখানে সমুদ্রের গর্জনে
নিঃশ্বাসটুকু নেওয়া যেত না!

আজ কিনা সেখানে সমুদ্রের
হাওয়া টুকু বইতে পারে না!

বিজ্ঞানের কাছেও
নেই এই উত্তর!

চলুন দেখে নেওয়া যাক
এর আসল রহস্য কি

Body:

পুরী এই শব্দটি মাথায় আসলে সবার আগে দুটি বিষয় মাথায় আসে এক জগন্নাথ মন্দির, দুই পুরীর গজা। সকল পূর্ণার্থীদের তীর্থধাম মানেই পুরীর জগন্নাথ মন্দির। শুধু ভারতেই নয় গোটা বিশ্ব থেকে কাতারে কাতারে ভক্তরা এই মন্দিরে ভিড় জমায়। আর এই মন্দির ঘিরেই রয়েছে একাধিক অলৌকিক কাহিনী। শোনা যায় শ্রীকৃষ্ণের মৃত্যুর পর পুরীর মন্দিরে জগন্নাথ রূপে আবির্ভূত হন। কথিত আছে, জগন্নাথদেবের মধ্যেই স্বয়ং শ্রীকৃষ্ণের হৃদয় প্রতিষ্ঠিত রয়েছে। ৮০০ বছরের পুরনো এই মন্দির ঘিরে রয়েছে একের পর এক অলৌকিক কাহিনী। আর এইসব অলৌকিক কাহিনীর উত্তর কিন্তু বিজ্ঞানীদের হাতেও নেই। এই কাহিনীর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে সমুদ্রের গর্জন। আজ পর্যন্ত কোন ভক্তরাই মন্দিরে প্রবেশের পর সমুদ্রের আওয়াজ পায়নি। সিংহদ্বার অবধি সমুদ্রের আওয়াজ পাওয়া গেলেও। মন্দিরের ভিতরে প্রবেশ করা মাত্রই উবে যায় সমুদ্রের গর্জন। কি শুনতে অবাক লাগছে তাই না! কিন্তু কখনো কি এই প্রশ্ন মনে জেগেছে যে, সমুদ্র এতো কাছে থাকা সত্ত্বেও কিভাবে এমন কান্ড ঘটতে পারে? কেনোই শুধু মন্দিরের ভেতর এই আওয়াজ প্রবেশ করে না। তাহলে জানিয়ে রাখি এই ঘটনার পিছনে রয়েছে এক অলৌকিক কাহিনী। যা শুনলে আপনি চমকে যাবেন।

পৌরাণিক কাহিনী অনুসারে, মন্দিরের ভেতরে সমুদ্রের গর্জন না পাবার পেছনে রয়েছে স্বয়ং হনুমানজির কৃপা। সেই সময় একবার বিষ্ণুর পরমপ্রিয় ভক্ত নারদ মুনী জগন্নাথ দেবের সাথে দেখা করতে আসেন। আর বাইরে পাহারায় ছিলেন বজরংবালী। যিনি আবার রামের পরম ভক্ত। আর যেহেতু রাম,কৃষ্ণ, বিষ্ণু, জগন্নাথ সকলেই এক অবতার। তাই প্রভু যেখানেই থাকবেন সেখানে প্রকট হবেন হনুমানজি। কিন্তু যে সময় নারদ মুনি জগন্নাথদেবের সাথে দেখা করতে এসেছিলেন। তখন প্রভুর বিশ্রামের সময় ছিল। তাই হনুমানজি মহর্ষি নারদকে বলেন, জগন্নাথদেব এখন বিশ্রামে আছেন। তাই কিছুক্ষন অপেক্ষা করুন। হনুমানজির কথা মতো তিনি অপেক্ষাও করতে থাকেন। এরপর প্রভুর বিশ্রাম সম্পন্ন হলে তিনি দেখা করতে যান। কিন্তু জগন্নাথ দেবের সাথে দেখা করতে গিয়ে তিনি নিরাশ হন। কারণ সেই সময় জগন্নাথদেবকে অত্যন্ত পরিশ্রান্ত দেখাচ্ছিল। প্রভুর সাথে কথা বলে জানতে পারেন সমুদ্রে গর্জনের জন্য তাঁর নিদ্রা সম্পন্ন হচ্ছে না। সেজন্য তিনি অত্যন্ত ক্লান্ত। আর এ কথা শুনে নারদমুনি, সঙ্গে সঙ্গে হনুমানজিকে প্রভুর সমস্যার কথা খুলে বলেন। তিনি এ কথা শুনে ক্রুব্ধ হন। ভগবানের সমস্যার কথা শুনে নিজেকে ধরে রাখতে পারেন না। সঙ্গে সঙ্গে তিনি সমুদ্র দেবকে আহ্বান করতে থাকেন। বজরংবলীর ডাকে ডাকে সমুদ্রদেব ধরিত্রীতে এসে ধরা দেন। হনুমানজি বলেন এক্ষুনি তাকে এই গর্জন বন্ধ করতে হবে। কারণ তার প্রভুর সমস্যা হচ্ছে। কিন্তু সমুদ্রদেব এ কথা শুনে বিনম্রভাবে বলেন তার পক্ষে একাজ করা সম্ভব নয়। কারণ যতক্ষণ বাতাস বইবে ততক্ষণ সমুদ্রের গর্জন সৃষ্টি হবে। আর সমুদ্রের গর্জন বন্ধ করতে পারবেন একমাত্র পবনদেব। এরপর সমুদ্র দেব আবারো নিজের স্থানে ফিরে যান। কথিত আছে এই সমস্যা দূর করার তিনি পিতা পবনদেবের কাছে হাজির হয়েছিলেন । হনুমানজি পবনদেবকে জানান যে, বাতাস চলাচলের ফলে সমুদ্রের গর্জন মন্দিরের ভেতর প্রবেশ করছে। এতে করে তার প্রভুর নিদ্রায় বিঘ্ন ঘটছে। তাই পিতাকে অনুরোধ করেন এই স্থানে হাওয়ার গতি যেন তিনি বন্ধ করে দেন। কিন্তু পবনদেব পুত্রকে বলেন তার পক্ষে যে কোন একটি নির্দিষ্টস্থানে হাওয়া রোধ করা সম্ভব নয়। হনুমানজি একথা শুনে ভেঙে পড়েন। তিনি ভাবতে থাকেন তাহলে কি কোনভাবেই এই সমস্যা তিনি দূর করতে পারবেন না। তখন পবন দেব উত্তর দেন অবশ্যই এই সমস্যা থেকে সমাধান পাওয়া যাবে। যদি হনুমানজি, মন্দিরের চারপাশে একটি বলয় তৈরি করে দিতে পারে। তাহলে সমুদ্রের গর্জন আর ভেতরে প্রবেশ করবে না। পিতার পরামর্শ শুনে তিনিও পুরীর মন্দিরের চারপাশে জাগতিক বলয় সৃষ্টি করেন। এরফলে হাওয়া উল্টোদিকে বইতে থাকে। আর এই বলয়ের মাধ্যমে মন্দিরের ভেতরে সমুদ্রের গর্জন প্রবেশ করা বন্ধ হয়ে যায়। সেই থেকে আজও কোনদিন মন্দিরের ভেতর সমুদ্রের গর্জন প্রবেশ করে না। এমনকি উল্টোদিকে হাওয়া বয়ে যাবার জন্য মন্দিরের ধ্বজাকেও বিপরীত দিকে উড়তে দেখা যায়।


Posted

in

by

Tags:

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *