জানেন? কে এই বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়? যার দাপটে থরথরিয়ে কাঁপছে বাংলার এসএসসি কমিটি

জানেন? কে এই বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়? যার দাপটে থরথরিয়ে কাঁপছে বাংলার এসএসসি কমিটি

জানেন?

কে এই বিচারপতি
ডিওয়াই চন্দ্রচূড়?

যার দাপটে থরথরিয়ে কাঁপছে
বাংলার এসএসসি কমিটি!

যার রায়ে ঘুম উড়েছে
বাংলার চাকরিহারাদের!

এনার এক একটি অর্ডারে
কেঁপে কেঁপে উঠছে দিল্লীর এজলাস!

দুর্নীতি দেখলেই ঝাড় দিচ্ছেন!
অন্যায়ের সঙ্গে কোনও আপোস নয়!

আজকের এই ভিডিওতে জানুন
এই মানুষটা সম্পর্কে

বিগত কিছুদিন ধরেই বারে বারে শিরোনামে আসছেন সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচুর। মূলত সুপ্রিম কোর্টে চলা এসএসসি মামলার দৌলতে তিনি ইদানিং খবরে থাকছেন। এনার দিকেই তাকিয়ে রয়েছে বাংলার হাজার হাজার চাকরিহারা মানুষ। পরবর্তী শুনানিতে তিনি কি রায় দিতে চলেছেন, কি থাকবে তার বক্তব্যে —– এই নিয়েই চলছে তীব্র টানাপোড়েন। অত্যন্ত স্পষ্টবক্তা এই মানুষটি। ইতিমধ্যেই রাজ্যের এসএসসি দুর্নীতি নিয়ে তিনি এমন একটি মন্তব্য করেছেন যা রীতিমত শোরগোল ফেলে দিয়েছে। তিনি এসএসসি দুর্নীতির বিষয়টিকে একটি সিস্টেমেটিক ফ্রড বলে উল্লেখ করেছেন।

ডিওয়াই চন্দ্রচুর কোনও সাধারণ বিচারপতি নন। আইনের ময়দানে তিনি যথেষ্ট অভিজ্ঞ ও দক্ষ! এক্কেবারে দুঁদে আইনজীবী যাকে বলে। দীর্ঘ ছয় বছরেরও বেশি সময় ধরে অত্যন্ত দাপট এবং সুনামের সঙ্গে তিনি সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি হিসেবে কাজ করেছেন। এরপর ২০২২ সালের নভেম্বর মাসের ৯ তারিখ বুধবার তিনি ভারতের ৫০ তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে শপথ নেন। এই সময়কাল থেকে আগামী দুবছর তিনি এই পদে বহাল থাকবেন।

ছোটবেলা থেকেই বিচারপতি চন্দ্রচুর অন্যদের থেকে একটু আলাদা ছিলেন। আর পাঁচটা সাধারণ ছেলে মেয়েরা যখন, অঙ্কের বই, ইতিহাসের বই ……. নিয়ে ব্যস্ত থাকতো তখন তিনি আইনের বই ঘাটাঘাঁটি করতেন। তিনি ডাক্তার কিংবা ইঞ্জিনিয়ার হতে চাননি তিনি বরাবরই চেয়েছেন একজন সফল আইনজীবী হতে। আর আইনের প্রতি তার এই আগ্রহ এবং ভালোবাসা জন্মেছে তার বাবাকে দেখে। আপনাদের জানিয়ে রাখি যে বিচারপতি চন্দ্রচূড়ের বাবা, বিচারপতি ওয়াইভি চন্দ্রচুর, ৪৪ বছর আগে ভারতের প্রধান বিচারপতি হিসেবে শপথ নিয়েছিলেন। অর্থাৎ সেই হিসেবে দেখতে গেলে, বিচারপতি ওয়াইভি চন্দ্র চুর এবং বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্র চুর , ভারতের ইতিহাসে প্রথম লু বাবা ছেলের জুটি, যারা প্রধান বিচারপতির পদ অলংকৃত করেছেন।

বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় ১৯৫৯ সালের ১১ই নভেম্বর মুম্বাইয়ে জন্মগ্রহণ করেন। সেখানেই তার বেড়ে ওঠা এবং পড়াশোনা। ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় নয়া দিল্লির সেন্ট স্টিফেন্স কলেজ থেকে অর্থনীতিতে অনার্স সহ বিএ পাস করেন। এরপর ১৯৮২ সালে তিনি দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস ল সেন্টার থেকে অত্যন্ত আগ্রহের সঙ্গে এলএলবি ডিগ্রি লাভ করেন। এরপরও তিনি থেমে থাকেননি। ১৯৮৬ সালে ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় চলে যান মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হারবার্ড ল স্কুলে। সেখানে গিয়ে জুরিডিকাল সাইন্স এর বিষয়ে এল এল এম ডিগ্রি এবং ডক্টরেট ডিগ্রী অর্জন করেন। এরপর ঝুলি ভর্তি ডিগ্রী এবং বিদ্যাবুদ্ধি নিয়ে ফিরে আসেন দেশে।

তিনি বম্বে হাইকোর্ট এবং সুপ্রিম কোর্টে আইনি অনুশীলন শুরু করেন। ১৯৯৮ সালের জুন মাসে ডি ওয়াই চন্দ্রচুর বম্বে হাইকোর্টের একজন সিনিয়র আইনজীবী হিসেবে মনোনীত হন। এরপর ১৯৯৮ সাল থেকে ২০০০ সালের মার্চ মাস পর্যন্ত তিনি অতি সম্মানের সঙ্গে ভারতের অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল হিসেবে দক্ষতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেন। এক কথায় দেখতে গেলে বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের কর্মজীবন সত্যিই অনবদ্য। অসম্ভব অভিজ্ঞতা এবং ভুরি ভুরি স্বীকৃতিতে ভরপুর বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচুরের কর্মজীবন। ২০১৩ সালের অক্টোবরে তিনি এলাহাবাদ হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি হিসেবে পুনরায় কর্মজীবন শুরু করেন। আইনের ময়দানে নিজেকে পারদর্শী করে তোলেন। এরপর ২০১৬ সালের মে মাসে, সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি হিসেবে নিযুক্ত হন ডি ওয়াই চন্দ্রচুর। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েই গিয়েছে বিচারপতি চন্দ্রচূড়ের দায়িত্ব। সর্বশেষে ২০২২ সালের নভেম্বর মাসে সুপ্রিম কোর্টের সর্বশেষ প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি ইউ ইউ ললিত, বিচারপতি চন্দ্রচুরকে তার উত্তরসূরি হিসেবে বেছে নেন। আর সেই পদে তিনি আজও সম্মানের সঙ্গে বহাল রয়েছেন। শুধু তাই নয় তিনি এমন এমন রায় দিচ্ছেন যা গোটা দেশকে নাড়িয়ে দিচ্ছে।

বিচারপতির ডি ওয়াই চন্দ্রচুরের বেশ কিছু স্মরণীয় রায় দেখে নিন

তালিকায় সবার প্রথমেই থাকছে শবরীমালা মন্দিরে মহিলাদের প্রবেশ নিয়ে মামলার শুনানির রায়। এই মামলার শুনানি ওকারি বেঞ্চের অংশ ছিলেন বিচারপতি চন্দ্রচূড়। তিনি বলেছিলেন – শবরীমালা মন্দিরে ১০থেকে ৫০ বছর বয়সী মহিলাদের প্রবেশাধিকার না দেওয়া সাংবিধানিক নৈতিকতা লঙ্ঘনকারী।

এরপরে রয়েছে ভীমা কোরেগাঁও মামলায় বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের স্মরণীয় রায়। এই মামলায় পাঁচ জন মানবাধিকারকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়। এই মামলায় বিচারপতি চন্দ্রচূড় বলেছিলেন সংবিধানের ১৯ এবং ২১ নম্বর অনুচ্ছেদ অনুযায়ী অভিযুক্তদের মত প্রকাশের স্বাধীনতা এবং ব্যক্তিগত স্বাধীনতার মৌলিক অধিকার লংঘন করা হয়েছে কিনা তা দেখতে হবে।

এই রায় গুলোর কারণে ডিওয়াই চন্দ্রচূড় এখনও বেশ আলোচিত। তবে এই মুহূর্তে পশ্চিমবাংলার এসএসসি মামলা নিয়ে তিনি যে রায় দিচ্ছেন সেগুলোও কিন্তু কম আলোচিত নয়।

সত্যি বাংলায় দুর্নীতির যে অরাজকতার শুরু হয়েছে, এই অরাজকতাকে ধ্বংস করে,,, ন্যায় ও সত্যকে প্রতিষ্ঠা করার জন্য,,, প্রতিটি বিচারপতির মধ্যে ডিওয়াই চন্দ্রচূড় এর মতন মানসিকতা জন্ম নেওয়া উচিত বলে মনে করছেন সমাজ বিশেষজ্ঞরা!


Posted

in

by

Tags:

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *