জানেন? কিভাবে পড়াশুনো করলে মাধ্যমিকে প্রথম হওয়া যায়? র্যাঙ্ক করা যায়? টিভিতে আসা যায়?
জানেন?
কিভাবে পড়াশুনো করলে
মাধ্যমিকে প্রথম হওয়া যায়?
র্যাঙ্ক করা যায়?
টিভিতে আসা যায়?
যারা মাধ্যমিকে প্রথম হয়,
তাদের গোপন টোটকাটাই বা কি?
কোন পদ্ধতি মেনে
তারা পড়াশুনো করেন?
এই প্রশ্নগুলো এখন বহু পড়ুয়ার মনে মনে ঘুরছে। প্রতিবছর মাধ্যমিক পরীক্ষার রেজাল্ট বেরোয়। সামনে আসে মেধা তালিকা। যেখানে একজন থাকে সবার উপরে, যার নাম্বার থাকে সবার চেয়ে হাইয়েস্ট! সকলের কাছে যার পরিচয় _ ওয়েস্ট বেঙ্গলের মাধ্যমিকের টপার। এই টপারের পরেই থাকে ২য়, ৩য় করে সর্বোচ্চ নম্বর প্রাপ্তদের নাম। সারাদিন এদেরকে টিভিতে দেখায়। সাংবাদিকরা এদের বাড়িতে ছোটেন। টিভির অপর অপর প্রান্তে থাকা বাকি ছাত্র ছাত্রীরা তখন মনের গহীনে গিয়ে ভাবে, এরা কিভাবে সবার সেরা হয়ে যায়! ঠিক কতটুকু, কি পরিমান পড়াশোনা করে এরা সারা ওয়েস্ট বেঙ্গলের মধ্যে সেরা হয়? সেরার সেরা হওয়া আসলে কতটা কঠিন?
এগুলো ভাবতে ভাবতে অপর প্রান্তে বসে থাকা ছাত্র-ছাত্রীদের মনে প্রশ্ন জাগে। তারাও কি চাইলে একদিন এদের মতন টপার হতে পারবে? এদের মতন টপার হতে গেলে কোন মন্ত্র জপতে হবে?
আজকের প্রতিবেদন সেই সমস্ত কৌতূহলী ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য। ইতিমধ্যে সকলেই জানেন যে, ২০২৪ সালের মাধ্যমিকে টপার বয় চন্দ্রচূড় সেন। কৃতী এই ছাত্রের প্রাপ্ত মোট নম্বর ৬৯৩। ভাবা যায়? ৭০০ তে ৬৯৩! আর ৭ নম্বরের জেরে ৭০০ হাতছাড়া! চন্দ্র মোট ৯৯% নম্বর পেয়েছেন। প্রতিটি পড়ুয়াদের কাছেই সে এখন হিরো। তবে তাকে হিরো হতে গিয়ে কি কি করতে হয়েছে সেটাই আজকের প্রতিবেদনে জানাব।
শুরুতেই বলে রাখি প্রত্যেক বছর মাধ্যমিক খুব বা উচ্চমাধ্যমিক এই সমস্ত বোর্ডের পরীক্ষায় যারা এই প্রথম সারিতে থাকেন তাদের মধ্যে একটি বিষয় বেশ কমন। আর সেটি হল কমন সেন্স যাকে আমরা বলি সাধারণবমা জ্ঞান। সেই সঙ্গে আরো বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় লক্ষ্য করা যায় সেগুলো হলো,,,, সেন্স অফ হিউমার, উপস্থিত বুদ্ধি, সাহিত্য সমৃদ্ধ মনোভাব, মানবিকতা, দূরদর্শী সম্পন্ন মানসিকতা, খোলা মন, উদার হৃদয়। এই প্রতিটি গুণাবলী প্রতিটি কৃতি ছাত্রের মধ্যেই দেখা গিয়েছে। সেটা ২৪ এর চন্দ্রচূড় হোক বা ২৩ এর দেবদত্তা মাঝি। প্রত্যেকের ক্ষেত্রেই এগুলো বিদ্যমান। আপনারা হয়তো দেখেছেন পরীক্ষায় সাফল্যের কারণ বর্ণনা করতে গিয়ে চন্দ্রচূড়ের মুখে শোনা গিয়েছে কৌতুহল এবং মনোযোগের কথা। চন্দ্রচূড়ের মতে কৌতুহল তাকে অনেক বড় মানুষ হতে সাহায্য করবে আর মনোযোগ তাকে পরিণত হতে শেখাবে। ছোট্ট এই ছেলেটির এই পরিণতমনস্ক কথাগুলো বুঝিয়ে দেয় যে সে কতটা দূরদর্শী সম্পন্ন।
চন্দ্রচুর, দেবদত্তা এদের কথা শুনে বোঝা যায় টপার হওয়ার জন্য দিনরাত বইয়র পাতায়, মুখ গুঁজে থাকাটাই আসল কাজ নয়। এভাবে টপার হওয়া যায় না। বাস্তবের মাটিতে দাঁড়িয়ে বাস্তবতাকে অনুভব করে প্রকৃতির মাঝে যে শিক্ষা লুকিয়ে আছে তাকে আলিঙ্গন করার মধ্য দিয়েই মূলত টপার হওয়া যায়। এদের মতন কৃতি ছাত্ররাই বলছে যে এরা কেউ ১২ ঘণ্টা কিংবা ২৪ ঘন্টা ধরে বইয়ের পর এদের মতন কৃতি ছাত্ররাই বলছে যে এরা কেউ ঘন্টা ধরে পড়াশোনা করেননি। এরা পড়াশোনা করেছে অজানাকে জানতে, এরা পড়াশোনা করেছে আনন্দের সাথে, এদের কাছে বই মানে আতঙ্ক নয় এদের কাছে বই মানে অজানাকে জানার দরজা খুলে দেওয়া। এদের কাছে বই মানে তথ্যের ভান্ডার। এদের কাছে বই মানে সত্যি সত্যিই জ্ঞানের আলো। এদের কাছে বই মানে শুধুমাত্র পাস করার এবং সার্টিফিকেট পাওয়ার একটি হাতিয়ার নয়। এরা প্রত্যেকেই ভীষণ মাত্রায় বিশ্বাস করে বই তাদের বাস্তবিক জ্ঞানবোধ বুদ্ধি সম্পন্ন মানুষ হয়ে উঠতে সাহায্য করবে। বই হবে অন্ধের লাঠি এটাই তারা বোঝে। বই পরীক্ষা সিলেবাস এই তিনটির সঙ্গে এদের কোনও বিরোধ নেই। যে সমস্ত পড়ুয়ার আজকের এই প্রতিবেদন দেখছে, তারাও নিশ্চয়ই বুঝতে পারছে যে ভালো ফল করতে হলে এই গুণাবলীগুলো ধারণ করা আবশ্যক। অধ্যাবসায় কঠোর মনোযোগ একনিষ্ঠ লক্ষ্য যে কোন পড়ুয়াকে জীবনে বড় হতে অনেক বেশি সাহায্য করে। কথায় বলে ছাত্রনং অধ্যায় তপ: ! অর্থাৎ পড়াশুনা হলো সাধনার মতন। যে পড়ুয়া যত বেশি সাধনা করবে তার মান তত উন্নত হবে। আর পড়াশোনার মতন সাধনা করতে গিয়ে ফাঁকি দিলে জীবনে বড় হওয়া যায় না। আর তাই জীবনে বড় হতে গেলে কঠোর তপস্যায় সফলতা অর্জন করতে হবে।
Leave a Reply