কীভাবে সাংবাদিকতা থেকে রাজনীতিতে এসেছিলেন কুণাল ঘোষ? কোন জাদুবলে হয়েছিলেন মমতা অভিষেকের ঘনিষ্ঠ?
কীভাবে সাংবাদিকতা থেকে
রাজনীতিতে এসেছিলেন কুণাল ঘোষ?
কোন জাদুবলে হয়েছিলেন
মমতা অভিষেকের ঘনিষ্ঠ?
আবার কীভাবেই বা হলেন
মমতা অভিষেকের চক্ষুশূল?
দেখুন কুণাল ঘোষের আদ্যপান্ত
তিনি সোজা সাপ্টা কথা বলতে বিশ্বাসী। জীবনের উত্থান পতনের রোলারকোস্টারে তিনি বড্ড সাবলীল এবং যুতসই। কে কি বলল, না বলল সেসব নিয়ে তিনি ভাবিত নন! উল্টে সাত পাঁচ না ভেবেই, নিজের বক্তব্য জাহির করতে তিনি বড় ওস্তাদ। কথা হচ্ছে কুণাল ঘোষকে নিয়ে। অবশ্য আপনাদেরও আর বুঝতে বাকি নেই যে,, মানুষটা কুণাল ঘোষ। এই মানুষটিকে নিয়ে কোথা থেকে যে, কথা শুরু করব, সেটাই ভেবে পাচ্ছি না!
কুণাল ঘোষ একদা ছিলেন দুদে সাংবাদিক। সেখানে থেকেই রাজ্যসভার সাংসদ। এই যাত্রাটা অবশ্য খুব একটা সরল ছিল না। কুণাল ঘোষের এই যাত্রা পথের সঙ্গে জড়িয়ে আছে, বিস্তর সমালোচনা, তীব্র গাল মন্দ ….. অবশ্য সেই সঙ্গে বেশ কিছু বড় বড় প্রাপ্তি যোগ!
আচ্ছা আর কথা না বাড়িয়ে, চলুন মূল কথায় ফিরে যাওয়া যাক। এই যে কুণাল ঘোষ, এই মানুষটি কর্মজীবন শুরু করেছিলেন পুরোদস্তুর সাংবাদিকতা দিয়ে। সেই সময়, চ্যানেল 10 সহ বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় কুণাল বাবু যথেষ্ট দাপটের সঙ্গে কাজ করেছেন। বলা বাহুল্য যে, কুণাল ঘোষ সাংবাদিক হিসেবে ছিলেন এক্কেবারে দক্ষ একজন মানুষ। আপনাদের জানিয়ে রাখি যে, আনন্দ বাজার পত্রিকাতেও কুণাল বাবুর বাই লাইন স্টোরি যেত।।
তবে সাংবাদিক হিসেবে দক্ষ হলেও, তিনি নিজেকে সাংবাদিক হিসেবে আবদ্ধ রাখেননি। আপনাদের জানিয়ে যে, কুণাল ঘোষ পলিটিক্যাল সাংবাদিকতায় তুখোড় ছিলেন। আর সেই সুবাদেই তিনি, সাংবাদিকতার পেশায় ইতি টেনে চলে আসেন রাজনীতিতে। আশ্চর্যের বিষয় হল সাংবাদিকতার মতনই রাজনীতিতেও তিনি নিজের জাত চিনিয়ে দেন। মমতা ব্যানার্জি হাত ধরে তিনি তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দেন। শুরু থেকেই তৃণমূল সুপ্রিমোর সাথে কুণাল বাবুর সম্পর্ক অনেকটা দিদি, ভাইয়ের মতন। নেত্রীর সমস্ত আদেশ , নির্দেশ সাধ্য মতন পালন করতেন কুণাল ঘোষ। তৃণমূলের অন্যতম সৈনিক মানা হত কুণাল ঘোষকে।
কিন্তু সময় যত যেতে থাকে, ততই দলের অন্দরে কমতে থাকে কুণাল বাবুর কদর। কিন্তু এখানে একটি প্রশ্ন উঠতে পারে সেটি হল কেন কুনাল বাবুর কদর কমে যায়? দেখুন এক্ষেত্রে বলতেই হবে যে, এক হাতে তালি বাজে না! বিভিন্ন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে কুনাল বাবুর বেশ কিছু কর্মকাণ্ডের কারণেই দলের অন্দরে এই কদর কমতে থাকে। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের বিশ্লেষণ অনুযায়ী, কুণাল ঘোষ এমন কিছু কান্ড কীর্তি ঘটাতেন যা দলের ভাবমূর্তির পক্ষে বিপদজনক হয়ে উঠত। বিরোধী দল থেকে শুরু করে নিজের দলের বিরুদ্ধেও মাঝে মাঝে এমন কিছু আক্রমণাত্মক মন্তব্য কুনাল ঘোষ শুনতেন যা সত্যিই নিন্দনীয়। কুনাল ঘোষের সব থেকে বিতর্কিত মন্তব্য, একবার তিনি শুভেন্দু অধিকারী কে তার জন্ম পরিচয় নিয়ে খোটা দেন। যা আজও রাজ্য রাজনীতির অন্দরে আলোচিত।
তবে কুনাল ঘোষ এর পুরানো কাসুন্দি না ঘেঁটে যদি নতুন কাসুন্দির দিকে নজর রাখা যায় অর্থাৎ সাম্প্রতিক সময়ে কুনাল ঘোষ যে সমস্ত মন্তব্য করেছেন, সেখানেও কিন্তু দেখতে পাবেন কুনাল ঘোষের রাখঢাক না রাখা ঝাঁঝালো মন্তব্য। সাম্প্রতিককালে উত্তর কলকাতার তৃণমূল প্রার্থী সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়কেও তিনি একেবারে চাঁচাছোলা ভাষায় আক্রমণ করেছেন। শুধু কি তাই আবার একটু পিছনের দিকে গেলে মনে পড়ে যাবে আপনাদের,,,, ২০১৩ সালে সারদা কেলেঙ্কারি মামলায় যখন কুনাল ঘোষকে আটক করা হয় তখন তিনি বলেছিলেন সারদা মামলার সবথেকে বড় সুবিধাভোগী হলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই সময় কুনাল ঘোষের এই মন্তব্যে রীতিমতো তোলপাড় হয়ে ওঠে গোটা রাজ্য। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে কুনাল ঘোষের আচরণ এবং মন্তব্য, তার মধ্যে লুকিয়ে থাকা স্বার্থপর, লোভী, বিশ্বাসঘাতকতামুলক দিকগুলোকে উন্মুক্ত করে।
পরিশেষে বলবো কুনাল ঘোষকে নিয়ে বলা কথা এখানেই শেষ নয়। কুনাল ঘোষ একটা অনেক বড় অধ্যায়।
Leave a Reply