দুবাইয়ের একটা ভুলের জন্যই ভাসছে গোটা শহর , জলের তলায় লুটোপুটি খাচ্ছে দুবাই !
দুবাইয়ের একটা ভুলের
জন্যই ভাসছে গোটা শহর
জলের তলায় লুটোপুটি
খাচ্ছে দুবাই !
বড় বড় দালান কোঠা
ইমারত সব এখন জলের তলায় !
প্রকৃতি অভিশাপ নাকি
প্রযুক্তির কারসাজি !
বাপরে বাপ ! একি অবস্থা দুবাইয়ের। একদিকে পশ্চিমবঙ্গবাসীদের মধ্যে বৃষ্টি নিয়ে হাহাকার তৈরি হয়েছে । আর অন্যদিকে না চাইতেই বৃষ্টিতে ভেসে গিয়েছে দুবাই । দুবাইয়ের অবস্থা হয়েছে মেঘ না চাইতেই জল। একেবারে ৬ মাসের বৃষ্টি একদিনেই হয়েছে দুবাইতে। দানবসম বৃষ্টিতে ভাসছে গোটা দুবাই। ভারতের বড় বড় তারকাদের বাসস্থানের অপর নাম এই দুবাই । শাহরুখ খান থেকে আম্বানি সকলেই উইকেন্ড কাটাতে চলে আসেন এই বিলাসবহুল শহরে । কিন্তু এখন এই শহর জলের তলায় গড়াগড়ি খাচ্ছে । এই মুহূর্তে দুবাইকে দেখলে মনেই হবে না এটি কোনও মরু শহর। আমরা সকলেই জানি দুবাই উষ্ণ এবং শুষ্ক এলাকা । যেখানে বৃষ্টি হয় না বললেই চলে। আর হঠাৎ আকাশভাঙ্গা বৃষ্টির সম্মুখীন হতে হলো দুবাইকে। প্রায় ১০০ বছরেও এমন বৃষ্টি হয়নি দুবাইতে । আর বৃষ্টির জেরে বিমান থেকে শুরু করে চারচাকা সবই হাবুডুবু খাচ্ছে জলের তলায় । মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে থাকা ইমারতও ডুব দিয়েছে বৃষ্টির জলে । বাড়ি, ঘর রাস্তাঘাট কিছুই চোখে পড়ছে না । সামাজিক মাধ্যমে চোখ রাখলেই দেখা যাচ্ছে দুবাইয়ের এই ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি। দুবাইয়ের এই ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি দেখে হতবাক গোটা বিশ্ববাসী । তবে আচমকা দুবাইয়ের মত মরুশহরে এমন বৃষ্টি হওয়ার কারণ সকলকেই ভাবিয়ে তুলছে । এমনকি কেউ কেউ বলছে দুবাইতে মন্দির তৈরি হওয়ার কারনেই নাকি এমন দুরাবস্থা । এই তর্ক বিতর্ক চলতেই থাকবে। তবে তার আগে জেনেনিই এই বৃষ্টির আসল কারণ। দুবাইতে বাঁধাভাঙ্গা বৃষ্টি হয়েছে মোট দুটি কারনে । সেগুলি কি কি –
এক, ক্লাউড সিডিংঃ
অনেকেই দুবাইয়ের এমন পরিস্থিতির জন্য ক্লাউড সিডিং-কেই দায়ী করছে। বিশেষজ্ঞদের একাংশ দাবি করেছেন, ক্লাউড সিডিং-এর কারনেই দুবাইয়ের সকলকে হাবুডুবু খেতে হচ্ছে । এখন অনেকের মনে প্রশ্ন হচ্ছে এই ক্লাউড সিডিং আবার কি ? এটিকে নকল বৃষ্টি কিংবা প্রযুক্তির দ্বারা তৈরি বৃষ্টি বলা যেতে পারে। যেহেতু দুবাই অত্যন্ত শুষ্ক এবং উষ্ণ শহর । তাই এসব অঞ্চলে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ২০০ মিলিমিটারেরও কম। একেই উষ্ণ শহর তার উপর পরিবেশ দূষণ গরমের তাপমাত্রা আরও বেশি বাড়িয়ে দেয় । তাই মরু এলাকায় এই গরমের তাপমাত্রা ঠিক রাখতে কৃত্রিম বৃষ্টির প্রয়োগ করা হয়ে থাকে । এতে করে জলের ঘাটতিও অনেকটা মেটানো যায়। বিজ্ঞানীরা প্রযুক্তির মাধ্যমে এই বৃষ্টি তৈরি করে । বিভিন্ন রাসায়নিক পদার্থ যেমন সিলভার আয়োডাইড অথবা পটাশিয়াম আয়োডাইড বিমানের মাধ্যমে মেঘের মধ্যে স্প্রে করা হয় । এই রাসায়নিক পদার্থ ব্যবহারের ফলে জলীয়বাষ্প তৈরি হয়। এরপর মেঘ থেকে বৃষ্টি নামে। কিছুদিন আগেও নাকি এই প্রযুক্তির ব্যবহার করা হয়েছে বলে অনেকে দাবি করছেন । আর এর ফলে দুবাইতে এমন বন্যা তৈরি হয়েছে ।
দুই , বিশ্ব উষ্ণায়নঃ
আবার একদল বিজ্ঞানীরা মনে করছেন এই বৃষ্টির কারণ বিশ্ব উষ্ণায়নের জন্য। দুবাইকে অনেকেই স্মার্ট সিটি বলে থাকেন । গোটা শহর জুড়ে বড় বড় শপিং মল থেকে শুরু করে বড় বড় বিল্ডিং, বাড়ি ঘর কি না নেই । আর এই ইমারত তৈরির জন্য প্রতিনিয়ত প্রকৃতির ওপর অত্যাচার চালানো হচ্ছে । গোটা পৃথিবীর হৃদপিন্ড নিংড়ে নিচ্ছেে মানুষ। আর এই অত্যাচারের সবচেয়ে বড় নিদর্শন দুবাইয়ের পাম দ্বীপ। অবিকল একটি পাম গাছের আকার দিয়ে সমুদ্রের ওপর তৈরি করা হয়েছে এই দ্বীপ। কিন্তু এটা করার জন্য পৃথিবী মাকে ধ্বংস করে যে পরিমাণ বালি খনন করা হয়েছে তা আপনার ধারণার বাইরে। এই বালি দিয়েই সমুদ্রের জল বুজিয়ে তালগাছের মত দ্বীপ তৈরি করা হয়েছে। আর এই যে এত অত্যাচার ! এগুলি সব কোথায় যাবে ? বিজ্ঞানীদের মতে এই অত্যাচারের ফলে প্রকৃতির ভয়ঙ্কর পরিবর্তন ঘটছে । বিশেষ করে জলবায়ুর ওপর এর প্রভাব পড়ছে। যার দরুন আজ দুবাইয়ের বুকে এমন ভয়ঙ্কর পরিনতি তৈরি হয়েছে ।
Leave a Reply